পাট চাষে সঠিক পরিমাণে ও সঠিক পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার প্রয়োগ পদ্ধতি এবং পরিমাণ নির্ভর করে মাটির গুণাগুণ, বীজের জাত এবং স্থানীয় কৃষি পরিবেশের উপর। এখানে পাট চাষে সার প্রয়োগের সাধারণ নির্দেশনা দেওয়া হলো:
১. মাটি পরীক্ষা:
- মাটির পুষ্টি বিশ্লেষণ: পাট চাষের আগে মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পরীক্ষা করা উচিত। এতে করে কোন কোন পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন এবং কতটা পরিমাণে তা নির্ধারণ করা যায়।
২. সার প্রয়োগের সময় ও পরিমাণ:
- জৈব সার: পাট চাষের জন্য গোবর সার বা কম্পোস্ট প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি হেক্টরে ১০-১৫ টন জৈব সার মাটিতে মেশানো উচিত।
- রাসায়নিক সার:
- নাইট্রোজেন (N): পাট চাষের জন্য নাইট্রোজেন সার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি হেক্টরে ৬০-৮০ কেজি নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করা যেতে পারে।
- ফসফরাস (P₂O₅): প্রতি হেক্টরে ৩০-৪০ কেজি ফসফরাস সার প্রয়োগ করা উচিত।
- পটাশ (K₂O): প্রতি হেক্টরে ২০-৩০ কেজি পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. সার প্রয়োগের পদ্ধতি:
- জমি প্রস্তুতির সময়: মাটি চাষ করার সময় জৈব সার ও রাসায়নিক সার মাটিতে ভালোভাবে মেশাতে হবে।
- বীজ বপনের আগে: বীজ বপনের ১-২ সপ্তাহ আগে জমিতে ফসফরাস ও পটাশ সার প্রয়োগ করা উচিত।
- শীর্ষ সার প্রয়োগ: বীজ বপনের ৩-৪ সপ্তাহ পরে নাইট্রোজেন সার শীর্ষ সার হিসেবে প্রয়োগ করা উচিত। এটি সাধারণত ২-৩ ধাপে প্রয়োগ করা হয়।
৪. সার প্রয়োগের কৌশল:
- ভালোভাবে মিশ্রণ: সার মাটিতে সমানভাবে মেশাতে হবে যাতে গাছের শিকড় সহজেই পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে।
- প্রয়োজন অনুযায়ী পানি: সার প্রয়োগের পর মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সরবরাহ করতে হবে যাতে সার মাটিতে ভালোভাবে দ্রবীভূত হয় এবং গাছ সহজে পুষ্টি পায়।
৫. সম্পূরক সার প্রয়োগ:
- কেঁচো কম্পোস্ট: কেঁচো কম্পোস্ট পাটের জন্য উপকারী। এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায়।
- মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট: মাটির পুষ্টি বিশ্লেষণ অনুযায়ী প্রয়োজন হলে বিভিন্ন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যেমন জিঙ্ক, বোরন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
সঠিক পদ্ধতিতে এবং সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগ করলে পাটের ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব।