Friday, 19 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

দিনাজপুরে চাষ হচ্ছে ত্বীণ ফল


মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বীণ চাষ হচ্ছে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নে। প্রথমবারের মত মাত্র ৪ বিঘা পতিত জমিতে ত্বীণ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষক মতিউর মান্নান সরকার।

জানা যায়, কৃষক মতিউর ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে গাজীপুর থেকে ৯শ চারা নিয়ে চার বিঘা পতিত জমিতে ত্বীণ ফলের চাষ শুরু করেন।

বর্তমানে ওই বাগানের সারি সারি গাছের ডগায় দোল খাচ্ছে ত্বীণ ফল। এছাড়া চারা তৈরির কাজও শুরু করেছেন তিনি। বাগানে ৫টি জাতের ৯০০ চারা রোপণ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
ইলিশ দিয়ে প্রথমবারের মত কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন
ইলিশের কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরি

ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। এই মাছ স্বাদে অতুলনীয় ও গন্ধের জন্য দেশ ও বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই অতুলনীয় Read more

করলার লাভজনক চাষ পদ্ধতি
লাভজনক করলা চাষ

করলার লাভজনক চাষ চাষ পদ্ধতি করলার ইংরেজি নাম Gourd, আমাদের দেশে করলা গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও বর্তমানে করলা বার মাসই বাজারে Read more

সরেজমিনে বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মতিউর রহমান বাগানের গাছগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে আড়াআড়ি ভাবে বাঁশের খুটি দিয়ে উপরের অংশে সাদা সুতোর জাল ব্যবহার করা হয়েছে। ত্বীণ ফল দেখতে অনেকটা ডুমুর ফলের মত। গাছগুলোর গোড়ায় মাটির উপরিভাগে প্লাস্টিকের কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। বাগানে প্রায় ১০ জন শ্রমিক পরিচর্যার কাজ করছেন।

বাগান পরিচর্যার কাজ করা শ্রমিক হাসেম আলী বলেন, ‘বাগানে কাজ করে প্রতিদিন ৪শ টাকা করে আয় হয়। এতে আমাদের সংসার ভালো চলে। এই বাগান যদি এই এলাকায় অন্য ব্যক্তিরাও করে তাহলে আমার মত অনেক শ্রমিকের কর্মস্থান সৃষ্টি হবে।’

ত্বীণ ফলের বাগানের মালিক মতিউর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে আগের ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে চিন্তায় পড়ে ছিলাম। এর পরে আমার ছোট বোনের পরামর্শে এবং তারই অনুপ্রেরণায় আমি বেশ কিছু ফলের বাগান পরিদর্শন করি। পরিদর্শন করে আমার কাছে এই ত্বীণ ফলের বাগানটি ভালো লেগেছে। কারণ এই ফলগুলো সবচেয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চফলনশীল ফল হিসেবে মনে হয়েছে সে কারনে ত্বীণ ফলের বাগান করার সিদ্ধান্ত নেই। তার পরে আমি গাজীপুর থেকে ৯০০ চারা সংগ্রহ করি। আমার ৪ বিঘা পতিত জমি ছিল যেখানে কোন আবাদ হতো না। রোপণ করার মোটামুটি ৪৫ দিনের মাথায় ফল আসতে শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পুরোপুরি ৯০০ গাছেই ফল এসেছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেএটি বাজারজাত করা সম্ভব হবে। এই পর্যন্ত এই বাগানে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমার খুব আনন্দ লাগছে যে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এখান থেকে আমার টাকা আসা শুরু হবে। ত্বীণ ফলগুলো স্থানীয় বাজারেই প্রায় ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি কিছু কলম করতেছি যাতে করে বাগানটি আরো সম্প্রসিত হয়।’

জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ত্বীণ ফলটি আমাদের উত্তরবঙ্গের মধ্যে এই প্রথম চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে নবাবগঞ্জ উপজেলায় এই প্রথম। মতিউর সাহেব অনেক আগ্রহ করে এই বাগানটি শুরু করেছেন। বাগানের প্রত্যেকটি গাছ এখন পর্যন্ত ভালো আছে। এটির জন্য নবাবগঞ্জ কৃষি অফিস সার্বিক সহোযোগিতা করছে এবং করবে।

0 comments on “দিনাজপুরে চাষ হচ্ছে ত্বীণ ফল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *