Wednesday, 24 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বাধা, কমেছে রপ্তানির পরিমাণ


রপ্তানিতে নতুন খাত হিসেবে কৃষিজাত পণ্য গত কয়েক বছর ধরে আশা দেখাচ্ছিল। বিগত পাঁচ বছরে এই খাতের পণ্য রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণ হারে। গত অর্থবছরেও ১০০ কোটি ডলারের বেশি কৃষি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে এবার যেন কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বাধা বেড়ে চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই কমে গেছে রপ্তানি।

আগস্টে অবশ্য রপ্তানি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

তবে সামগ্রিকভাবে দুই মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি কমে গেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে মোট ৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।

গত বছর থেকে একই সময়ের চেয়ে এবার রপ্তানির পরিমাণ ৩৫ শতাংশ কম।

অন্যদিকে ১১ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে আগস্ট মাসে।

এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয় ৫ শতাংশ হলেও দুই মাসে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে মোট ১৪ শতাংশ।

কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে রপ্তানি করা হয় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, তাজা ও হিমায়িত সবজি।

রপ্তানিকারকদের সাথে কথা বলে জানা যায় অধিকাংশ গন্তব্যে জাহাজভাড়া কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।

গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্যাকেজিং পণ্যের দাম ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।

সেইসাথে সাম্প্রতিক সময়ে ময়দার দাম ৫৪ শতাংশ বেড়ে গেছে।

এসব নানাবিধ কারণে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।

যার ফলাফল হিসেবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে গেছে অধিকাংশ কারখানার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বা ইপিবি এর তথ্যানুসারে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭ কোটি ডলার।

২০২১–২২ অর্থবছরে সেটি বেড়ে যায়, যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১১৬ কোটিতে।

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় তাজা ও হিমায়িত উভয় ধরনের সবজিই।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ রপ্তানি হয় সবজি।

গত অর্থবছরে কৃষিজাত পণ্যের সামগ্রিক রপ্তানি বেড়ে গেলেও সেখানে সবজি রপ্তানি ছিল নিম্নমুখী।

চলতি অর্থবছরের এখন পর্যন্ত সবজি রপ্তানি হয়েছে ৭৪ লাখ ডলার।

গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবারের সবজি রপ্তানি ৭৫ শতাংশ কম।

এ বিষয়ে সবজি রপ্তানিকারকেরা জানান, করোনার পর উড়োজাহাজভাড়া বেড়ে গেছে।

যার কারণে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে সবজি রপ্তানিআগের চেয়ে কমেছে।

করোনার আগে ইউরোপে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে প্রতি কেজি সবজি ১৫০ টাকায় পাঠানো সম্ভব হত।

বর্তমানে সেই ভাড়া লাগছে ২৫০ টাকার কাছাকাছি।

একইভাবে মধ্যপ্রাচ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ উড়োজাহাজ ভাড়া বেড়েছে।

আর মূলত এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাজার দখল করছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে পোশাকের ক্ষেত্রে ভাড়া এবং সবজির ভাড়া একই রাখা হচ্ছে।

এতে দাম বেড়ে যাচ্ছে সবজির।

কিন্তু ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্যগামী উড়োজাহাজে কম ভাড়ায় সবজি রপ্তানি করতে পারেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ ফ্রুট, ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালায়েড প্রডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর।

তিনি দাবি করেন, ভারতের ব্যবসায়ীরা তাদের বাজার দখল করছেন।

তিনি আরও জানান আগে দেশে সবজি রপ্তানিকারক ছিলেন দুই শতাধিক।

বর্তমানে সে সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ জন।

বর্তমানে রপ্তানিকৃত কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের পরিমাণই বেশি।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ।

প্রতিষ্ঠানটির বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল।

তিনি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট ও কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে।

তাই বর্তমানে একটা কঠিন সময় যাচ্ছে।

তবে তারা উৎপাদনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তিনি জানান।

তবে চলতি অর্থবছরে সামগ্রিক রপ্তানি কমে গেলেও প্রাণ গ্রুপের রপ্তানি কমেনি।

0 comments on “কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বাধা, কমেছে রপ্তানির পরিমাণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *