Monday, 29 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

মাশরুম চাষ পদ্ধতি কিভাবে, কেন, কোথায় ?


মাশরুম অনেক পুষ্টিকর খাবার। মাশরুম এর মাধ্যমে হাই প্রোটিনযুক্ত ডায়েটের সমস্যা সমাধান হয়। মাশরুম হাই প্রোটিনযুক্ত। মাশরুম খেলে হজম হয় তাড়াতাড়ি। প্রোটিন ছাড়াও এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজপদার্থ।

মাশরুম চাষে জাত নির্বাচন

বিশ্বজুড়ে চাষ করা হয় নানা জাতের মাশরুম। তবে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এবং তুলনামূলক সহজ পদ্ধতিতে ঘরে ফলানোর জন্য উপযুক্ত অয়েস্টার, মিল্কি, প্যাডি স্ট্র জাতীয় মাশরুম।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

অয়েস্টার মাশরুম ফলানোর পক্ষে আবার শীতকাল উপযুক্ত। মিল্কি, প্যাডি স্ট্র জাতীয় মাশরুমের উপযুক্ত সময় মার্চের পর থেকে, যখন ঠান্ডা কমে যায়।

অয়েস্টার মাশরুম চাষে উপকরন কি কি লাগে?

প্রধানত তিনটি উপকরণ দরকার। মাশরুম চাষের উপকরন গুলো হচ্ছে,- স্পন বা মাশরুমের বীজ, খড় ও পলিথিনের ব্যাগ।

কোথায় পাওয়া যায় মাশরুমের বীজ এবং উপকরন ?

বাজারে সবজী বীজ স্যার বিক্রি করে এমন দোকানে মাশরুমের বীজ পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাশরুম প্রশিক্ষণকেন্দ্রে এবং অনলাইন শপিং সাইট থেকে মাশরুমের বীজ কিনতে পাওয়া যাবে।

মাশরুমের চাষ পদ্ধতিঃ

ধান বা গমের কাটা খড়গুলি কে জলে ভিজিয়ে মাশরুম চাষ করা যায় না। ঐ খড়কে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হয়। দুই রকম পদ্ধতিতে খড় জীবাণুমুক্ত করা যায়। ক) আগুনের তাপ দিয়ে, খ) রাসায়নিক পদ্ধতিতে।

ক) কাটা খড়গুলিকে ১০-১২ ঘন্টা পরিস্কার পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর খড়গুলি পানি থেকে তুলে ঝুড়ির মধ্যে রেখে অতিরিক্ত পানি ঝড়িয়ে নিতে হবে অল্প কিছুক্ষণ। পরিমাণমত একটি পাত্রে ঐ ভেজা খড়গুলি রেখে অল্প পানি দিয়ে ঐ পাত্রের মুখে একটি ঢাকনা দিয়ে আগুনের উপর বসিয়ে গরম করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত্য না পাত্রের উপরের খড়গুলি খুব ভালোভাবে গরম হয়। এতটাই গরম হবে যে উপরের খড়গুলিতে হাত দিয়ে ধরা যাবে না। এবার উনুন থেকে নামিয়ে গরম খড়গুলি ঐ পাত্রেই রেখে দিতে হবে ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত।

খড়গুলি ঠান্ডা হয়ে গেলে এর সঙ্গে ৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক (ব্যাভিষ্টিন), ৩ গ্রাম কীটনাশক (হেক্সা৫০) ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে স্পন (বীজ) বপন করতে হবে।

মাশরুমের চাষাবাদ
মাশরুমের চাষাবাদ

খ) ৬০ গ্রাম পাথরচুণ, ১০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার পরিমাণমত পানিতে গুলে নিয়ে কাটা খড়গুলিকে ঐপানিতে ১৮ থেকে ২৪ ঘন্টা নিমজ্জিত অবস্থায় রাখতে হবে। এরপর খড়গুলিকে তুলে পানি ঝরানোর জন্য রেখে দিতে হবে (১২-২৪ ঘন্টা)।

পানি ঝরানো হয়েছে কিনা তা একটি সহজ পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। এক মুঠ খড় নিয়ে জোরে চেপে ধরলে দেখা যাবে ঐ ভেজা খড়ে হাতের তল ভিজে যাবে কিন্তু কোন পানি ঝড়বে না। যদি দেখা যায় পানি ঝরছে তাহলে আরো কিছুক্ষণ জল ঝরার জন্য রেখে দিতে হবে। জল ঝরানো হয়ে গেলে ঐ খড়ে ৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক, ৩ গ্রাম কীটনাশক ও ৫ গ্রাম চুন (পাউডার করে নেওয়া) ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে স্পন (বীজ) বপন করতে হবে। ধান এবং গমের খড় ১ঃ১ মিশিয়ে মাশরুম চাষ করলে ফলন বেশী পাওয়া যায়। (বিঃ দ্রঃ – স্পন (বীজ) বপন পদ্ধতি নীচে লিপিবদ্ধ করা হল)।

বীজ বপন পদ্ধতি

মাশরুম সিলিন্ডার বানানোর জন্য ১২ ইঞ্চি ও ১৪ ইঞ্চি রোল পলিথিন ব্যবহার করা দরকার। এই পলিথিন রোল যথাক্রমে ২০ইঞ্চি ও ২২ ইঞ্চি করে কেটে নিয়ে সিলিন্ডার বানানো যায়।

পলিথিনের দুই দিক খোলা থাকে তাই প্রথমে একপাশে করে বেঁধে নিয়ে সূচ দিয়ে ৪০-৫০টি ফুটো করে দিতে হবে। এরপর ঐ ব্যাগটির মধ্যে ২-৩ ইঞ্চি পরিমাণ খড় দিয়ে ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে এবং উপরের দিকে কিছু পরিমাণ স্পন (বীজ) ছড়িয়ে দিয়ে আবার ২-৩ ইঞ্চি খড় দিতে হবে। এইভাবে সম্পূর্ণ ব্যাগটি খড় এবং স্পন (বীজ) দিয়ে ৫-৬ টি স্তরে ভর্তি করে ব্যাগটির মুখ ভালোভাবে বেঁধে নিলে সিলিন্ডারের মত ক্সতরী হবে। এই সিলিন্ডারকে মাশর‚ম ঘরে রেখে দিতে হবে।

masrum_মাশরুমের সিলিন্ডার

১২-১৬ দিন পর সম্পূর্ণ সিলিন্ডারটি মাইসিলিয়ামে ভরে গিয়ে সাদা হয়ে যাবে। এই অবস্থায় সম্পূর্ণ সিলিন্ডারের গায়ে আট জায়গায় গুণ (x)  (১.৫ X ১.৫ ইঞ্চি) আকারে কেটে দিতে হবে মাশরুমের কুঁড়ি বের হওয়ার জন্য। সিলিন্ডার কাটার ৮-১২ দিন পর মাশর‚মের কঁড়ি বের‚তে শুর‚ করলে পরিস্কার পানি স্প্রে করতে হবে (দিনে দুবার)।

মাশরুমের আহরন

পানি স্প্রে করার ৩-৫ দিনের মধ্যে মাশরম তোলার মত উপযুক্ত হয়। এ ছাড়া ফলন ভালো পেতে অপেক্ষা করে মাশরুম উত্তোলন করায় ভাল।

কেন আপনি মাশরুম চাষে অসফল হতে পারেন ?

ঘর তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব।

ভালো মানের বীজ  নির্বাচনে অদক্ষতা।

সময়মতো ভাল মানের বীজ না পাওয়া অথবা স্পনের অপ্রতুলতা ।

সঠিকভাবে পরিচর্যার অভাব ।

0 comments on “মাশরুম চাষ পদ্ধতি কিভাবে, কেন, কোথায় ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *