Saturday, 04 May, 2024

সর্বাধিক পঠিত

বাগেরহাটে হতাশায় বোরো চাষীরা


বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় ঝড় ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় বোরো ধান চিটে হয়ে গেছে। এছাড়া ঝড়ো বাতাসে ক্ষেতের ধান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে হতাশায় পড়েছেন চাষিরা।

রবিবার (৪ এপ্রিল) রাতে হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে বোরো ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেক কৃষক ধার করে ফসল উৎপাদন করে এমন ক্ষতিতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

কৃষি বিভাগ বলছে, আবার বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি ও অতিরিক্ত তাপমাত্রা না হলে কৃষকরা অনেকটাই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বোরো মৌসুমে বাগেরহাট জেলার নয়টি উপজেলায় ৫৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ঝড়ো বাতাসে এবং হিট স্ট্রেজের ফলে বাগেরহাটের নয়টি উপজেলায় ৪৪২ দশমিক ৬ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে, সব থেকে চিতলমারী উপজেলার চাষিদের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এই উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে সদর উপজেলা। এই উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ফকিরহাটে ৮০, কচুয়ায় ৪০, মোরেলগঞ্জে ২০, মোল্লাহাটে ১০, রামপালে ২ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে শরণখোলা ও মোংলায় সামান্য কিছু জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। এর ফলে প্রায় সহ্রসাধিক কৃষক আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি বলে দাবি করেছেন কৃষকেরা।

চিতলমারী উপজেলার শ্রীরামপুর বিলে ধান লাগানো কৃষক রনজিত কুমার বলেন, খুব আশা করে ধান রোপণ করেছিলাম। এক মাসের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু এখন ধানের যে ক্ষতি হয়ে গেল, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ঝড়ের পরে ধানের কাছে এসে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে যাই।

কৃষানী রত্না বৈরাগী বলেন, অনেক আশা করে ধান লাগিয়ে ছিলাম। ধান কাটবো, বাড়িতে নিবো। পরিবার-পরিজনকে নিয়ে বছর ভরে খাবো। কিন্তু ঝড়ে আমাদের শেষ করে দিয়ে গেল। ধানের কাছে এসে দেখি সব চিটা। এখন কিভাবে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাঁচবো, কিভাবে চলবো এই বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঝড়ো বাতাস ও অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় কিছুকিছু ধান ক্ষেত হিটস্ট্রেস জনিত কারণে ধানের ফুলস্তরের শীষ সাদা হয়ে গেছে। জেলায় ৪৪২ দশমিক ৬ হেক্টর জমির ধান আক্রন্ত হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান বেশি আক্রান্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটি সাময়িক আক্রান্ত, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বেশিরভাগ রিকভার করা সম্ভব। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কৃষকদের পরিমিত সেচ প্রদান ও যৌক্তিক পটাশ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

0 comments on “বাগেরহাটে হতাশায় বোরো চাষীরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *