Friday, 19 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

কাউন চাষে হতাশ কৃষক


কাওনের চাষে ভাটা পড়েছে

নীলফামারী জেলার আদি জনপ্রিয় ও মঙ্গা তাড়ানি শস্যদানার ফসল কাউনের চাষে হতাশ কৃষক । প্রকৃতিতে বৃষ্টি নির্ভর আমনের পাশাপাশি তালিকায় ছিল কাউন চাষ। ধানের ফলন তেমন না হওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়ত কৃষকেরা। এ সংকট মেটাতে বিকল্প ফসল হিসাবে কাউনের কদর ছিল ব্যাপক। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্তিক মাসে গোলা শূন্য হয়ে পড়তো তাদের। নিম্নআয়ের মানুষ ভাতের বিকল্প হিসেবে কাউনের ভাত খেত।

গ্রামীণ নারীরা ঢেঁকি কিংবা উড়ুন-গাইনে কাউন ছেঁটে চাল তৈরি করত। পুষ্টিকর এ চালে রুটি, ফিরনি, পায়েস, ক্ষীর, নাড়ু, মোয়া, খাজা এমন হরেক পদের সুস্বাদু খাবার ভোজনবিলাসী মানুষের কাছে সমাদৃত ছিল। নতুন প্রজন্ম বর্তমানে তা ভুলতে বসেছে।

কাউনের চাষ কিভাবে এবং কখন ?

আরো পড়ুন
ইলিশ দিয়ে প্রথমবারের মত কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন
ইলিশের কৌটাজাতকৃত খাদ্য তৈরি

ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। এই মাছ স্বাদে অতুলনীয় ও গন্ধের জন্য দেশ ও বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এই অতুলনীয় Read more

করলার লাভজনক চাষ পদ্ধতি
লাভজনক করলা চাষ

করলার লাভজনক চাষ চাষ পদ্ধতি করলার ইংরেজি নাম Gourd, আমাদের দেশে করলা গ্রীষ্মকালীন সবজি হলেও বর্তমানে করলা বার মাসই বাজারে Read more

কাউন চৈত্র মাসে বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে ফসল ঘরে ওঠে। এতে কোনও সেচের প্রয়োজন হয় না। কাউনের শীষ ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়ার পর বাকি গাছের অংশ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। কাউন চাষে প্রতি বিঘায় ফলন হত ৪ থেকে ৫ মণ। ফলন ও দাম ছিল অনেক কম। ফলে এ ফসল চাষে আগ্রহ হারায় কৃষকেরা।

সহজলভ্য চাষবাদ, খরা সহিঞ্চু , নদীর চর কিংবা অনুর্বর জমিতে চাষ করা যায় এই ফসল। তাই কাউনের উন্নত জাত সরবরাহ করে স্থানীয় কৃষি অফিসের তদারকির মাধ্যমে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের এ ফসল বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার দাবি সচেতন মহলের।

কাউনের  আবাদে এবং দামে হতাশা

নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়নের আরাজি ইটাখোলা গ্রামের কৃষক অতীন্দ্র নাথ রায় বলেন, এক সময় এ অঞ্চলে ব্যাপকহারে কাউনের চাষ হত। আমার বাপ-দাদারাও করত। এখন আর কেউ আবাদ করে না। তবে কাউনে খরচ কম। সেই সঙ্গে লাভ বেশি। বর্তমানে বাজারে চাহিদাও রয়েছে কাউনের। এবার ৬ শতাংশ জমিতে আবাদ শুরু করেছি। প্রতি কেজি বীজ কেনা হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। যা দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হবে। পাশাপাশি বাংলার হারানো ঐতিহ্যও ফিরে আসবে।

নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো কামরুল হাসান বলেন, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ফলে কৃষক উচ্চমূল্যের বিভিন্ন ফসল চাষবাদ করছেন। কাউন চাষের তেমন ফলন ও দাম না পেয়ে কৃষকরা কাউন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

0 comments on “কাউন চাষে হতাশ কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *