Wednesday, 08 May, 2024

সর্বাধিক পঠিত

আসছে ধানের নতুন জাত ‘ব্রি ধান-১০০’


বোরো মৌসুমে আবাদের জন্য ‘ব্রি ধান-১০০’ নামের উচ্চমাত্রার জিংক পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি ধানের জাত আসছে। এতে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ, প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং জিংকের পরিমাণ ২৫ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম/কেজি।

জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা এই ধানের জন্য গবেষণা শুরু করেন। ৫ বছর ফলন পরীক্ষার পর ২০১৭ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর গবেষণা মাঠে এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষক মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে ২০২০ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায়। জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দলের সুপারিশের পর জাত হিসেবে ছাড়করণের জন্য আবেদন করা হয়।

‘ব্রি ধান-১০০’এর গবেষণার সঙ্গে জড়িত ধানবিজ্ঞানী ড. মো. আব্দুল কাদের জানান, আগে থেকেই জিংক-সমৃদ্ধ ব্রি ধান-২৮ এবং ব্রি ধান-২৯ বাজারে রয়েছে। এ দুটি ধানে জিংকের পরিমাণ ১৫ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম/কেজি। এছাড়া ব্রি ধান-৭৪-এ জিংকের পরিমাণ ২৪ দশমিক ২ মিলিগ্রাম/কেজি। কিন্তু নতুন এই জাতে জিংকের পরিমাণ ২৫ মিলিগ্রাম/কেজি বেশি। অন্যান্য চালে প্রোটিনের পরিমাণ ৭ বা ৭ শতাংশের নিচে থাকে। কিন্তু এই চালে প্রোটিনের পরিমাণ ৮ শতাংশের কাছাকাছি। সারা দেশেই বোরো মৌসুমে এই জাতের ধান আবাদ করা যাবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন
চলমান তাপ প্রবাহে হাঁস-মুরগি ও প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা
চলমান তাপ প্রবাহে হাঁস-মুরগি ও প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা

তীব্র তাপপ্রবাহ হাঁস- মুরগি ও গবাদিপ্রাণির দেহে নানা ধরনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পীড়ন (স্ট্রেস) তৈরি করে, ফলে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপ্রাণির Read more

গাভীর জন্য PAG ভিত্তিক গর্ভাবস্থা সনাক্তকরণ নিয়ে ব্র্যাক এবং হেকেম (বাংলাদেশ) লিমিটেড এর চুক্তি স্বাক্ষরিত
BRAC AI enterprise & HAYCHEM BANGLADESH LIMITED

আজ ৬ মে ব্র্যাক কৃত্রিম প্রজনন প্রধান কার্যালয়, ৭৫ মহাখালী ঢাকায় ''গাভীর জন্য PAG ভিত্তিক গর্ভাবস্থা সনাক্তকরণ ল্যাবরেটরি টেস্ট" নিয়ে Read more

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, উচ্চমাত্রায় জিংকের অভাবে মানুষ খাটো হয়। এছাড়া ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া হয়। তাই বাংলাদেশে মানুষের এসব সমস্যা সমাধানে এই চাল ভূমিকা রাখবে। এই চালের ভাত খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।

ব্রি জানিয়েছে, ব্রি ধান-১০০তে আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়া অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার ও আকৃতি ব্রি ধান-৭৪-এর মতো। এই জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা, পতার রং সবুজ। পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০০ সেন্টিমিটার। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৮ দিন। ১ হাজার পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ১৬ দশমিক ৭ গ্রাম। চালের আকার-আকৃতি মাঝারি চিকন এবং রং সাদা।

ব্রি ধান-৮৪-এর চেয়ে এ জাতের ফলন প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি। ব্রি ধান-১০০-এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৭ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টরপ্রতি ৮ দশমিক ৮ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। ব্রি ধান-১০০-এ রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম হয়।

কৃষকেরা এই ধান কীভাবে আবাদ করবেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি ও সারের মাত্রা অন্যান্য উচ্চফলনশীল ধানের মতোই। ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর, অর্থাত্ অগ্রহায়ণের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে বীজ বপন করতে হবে। মাঝারি উঁচু থেকে উঁচু জমি এই ধান চাষের জন্য উপযুক্ত। ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হয়।

0 comments on “আসছে ধানের নতুন জাত ‘ব্রি ধান-১০০’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *