কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more
এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more
বিগত বছরগুলোতে এই সময় যে জমির ওপর পানি থইথই করেছে চারিদিকে পানি ছাড়া আর কিছু দেখা যায়নি। এবছর সেই জায়গাগুলোতে কৃষকেরা চাষ করেছেন আমনের ধান। আমনের সবুজ চারায় ঢেউ খেলছে খেতে। কৃষক মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে সেই ধান সোনালি হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনতে শুরু করেছেন।
মৌলভীবাজার জেলার কাউয়াদিঘি হাওর এবং এর পাশের সব কটি হাওর এলাকাতেই এমন দেখা যায়। এবছর অন্যবারের চাইতে আমন ধানের চাষ অনেক বেড়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকদের একমাত্র ফসলই হচ্ছে বোরো ধান। কিন্তু সেই কৃষকেরা বাড়তি ফসল হিসেবে এবছর আমন ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা এবছর ১ লাখ ১ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে। হাওরাঞ্চলে এর মধ্যে হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। শুধু কাউয়াদিঘি হাওরেই এক হাজার হেক্টরের বেশি আমন চাষ ধান হয়েছে। এছাড়া রয়েছে হাকালুকি হাওর ও হাইল হাওর। অথচ দু-তিন বছর আগেও এ জেলার হাওরাঞ্চলে আমন চাষ ছিল প্রায় শূণ্যের কোঠায়।
আমন ধানের ৮০ শতাংশই রোপণ হয়ে গেছে জেলায় । কিছুদিনের মধ্যে বাকিটা লাগানো হবে। গত বছরের তুলনায় এবারের লক্ষ্যমাত্রাও বেড়েছে।
কৃষি বিভাগ, কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবছর টানা বৃষ্টির দেখা মেলেনি বলে হাওরে পানি কম হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে যে জমিতে পানি থাকত সেখানে এবার পানি কম। কাউয়াদিঘি হাওরে সেচ দেওয়ার পরও পানি বাড়াতে পারেনি চাষিরা। তা্ই পানি কম থাকার সুযোগটা ভালভাবে কাজে লাগিয়েছেন কৃষকেরা। অতীতে এসব জমিতে শুধু বোরো ধানের ওপরই নির্ভর করে থাকতেন কৃষকেরা।
কাউয়াদিঘি হাওরের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুরা, একাটুনা ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল এবং রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও, উত্তরভাগ ইউনিয়নের হাওরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, পানি কম থাকায় কৃষকেরা এরই মধ্যে বেশির ভাগ জমিতে আমনের চারা রোপণ করে ফেলেছেন। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাওরে পানি কিছুটা বেড়েছে। এতে হাওরের নিচের দিকে পানি কম দেখে যাঁরা বীজতলা তৈরি করেছিলেন, সেসব স্থানের কিছু বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। সেখানে পানি না কমা পর্যন্ত অবশ্য কৃষকদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ ও পাউবো সূত্রে জানা যায়, কাউয়াদিঘি হাওর বিস্তৃত মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে। হাওরের বেশির ভাগ পড়েছে রাজনগর অংশে। শুকনা মৌসুমে বোরোতে সেচ প্রদান ও বর্ষায় হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৮৩ সালে স্থাপিত কাশিমপুর পাম্প হাউস দীর্ঘদিন ব্যবহৃত হবার কারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছিল না। যার ফলে ১৫-২০ বছর ধরে হাওরাঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে হাওরাঞ্চলে আমন চাষ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। বোরো ফসলও কৃষক ঘরে তুলতে পারতেন না নিয়মিত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক জানান, এবার টানা বৃষ্টি না হবার কারণে হাওরে পানি কম জমেছে। কাউয়াদিঘি হাওরে সেচও চালু থাকায় হাওরাঞ্চলে আমনের আবাদ বেড়ে গেছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সাথে সাথে কৃষকেরা মানিয়ে নিয়েছেন।তার মতে সামনে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত হলে কিছু ধান তলিয়ে নষ্ট হলেও আবার রোপণ করা যাবে।
