Monday, 29 April, 2024

সর্বাধিক পঠিত

লাভজনক হিসেবে মাশরুম বাজারজাত করতে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী


কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি অধিদপ্তরের একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। এ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এখানে মাশরুম উৎপাদনের গবেষণা এবং এর উন্নয়ন চাষি পর্যায়ে নিয়ে এর আবাদ করা ও এটিকে লাভজনক ফসল হিসেবে বাজারজাত করার ব্যাপারে এ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নও করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি শুরুতেই বলব, এটার যে সম্ভাবনা, সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে এটাকে জনপ্রিয় করার দরকার ছিল, ততটা আমরা করতে পারিনি। এজন্য আমি এটা দেখতে এসেছি।

রবিবার (০৬ জুন) দুপুর ১২টার দিকে সাভারের মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

আরো পড়ুন
কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রজনন রক্ষার্থে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির উন্মুক্ত স্থান। প্রজনন ক্ষেত্র বাচানোর জন্য রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে ২৫ এপ্রিল থেকে Read more

বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ

এবারের ২০২৪ সালের বোরো মৌসুমের ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। আজ রবিবার মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও Read more

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কীভাবে সুযোগ-সুবিধা আরো বাড়িয়ে ব্যাপকভাবে আমরা মাশরুম চাষ করতে পারি, সে চেষ্টা করব। সারা পৃথিবীতে মাশরুমের চাহিদা অনেক বেশি। আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও লিটারেচার থেকে জানি, মাশরুম খাদ্য হিসেবে খুবই পুষ্টি সম্মত। এর মধ্যে যথেষ্ট প্রোটিন আছে, অনেক ভিটামিন ও এনজাইম আছে, যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বাংলাদেশেও আমরা দেখি, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে, ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে ব্যাপকভাবে মাশরুমের খাবার পরিবেশন করা হয়। এছাড়া পৃথিবীর অনেক দেশ মাশরুম রপ্তানি করে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এ দু’টি বিষয় বিবেচনা করেই আমরা এ প্রতিষ্ঠান করেছিলাম। প্রতিষ্ঠানটি বেশ ভালো কাজ করছে। এখানে আধুনিক মডার্ন অনেক যন্ত্রপাতি রয়েছে। যেখানে ডিএনএ আ্যনালাইসিসও করা সম্ভব। মাশরুমের মধ্যে কোনো হেভি মেটাল আছে কি না, শরীরের জন্য অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ কিছু আছে কি না, সেগুলোও টেস্ট করা হয়। এটাকে আরো উন্নত করা যায় কীভাবে, তা দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, মাশরুম চাষে বাংলাদেশে অনেক বড় সম্ভাবনা রয়েছে। মাশরুম হয় এমন জায়গায়, যেখানে বেশি পানি থাকে ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে। এটা বাংলাদেশে খুব সহজেই হয়, এটা আমরা জানি। বিশেষ করে বর্ষাকালটা ছয়-সাত মাস তো সব কিছুই আমাদের স্যাঁতস্যাঁতে থাকে। আমি মনে করি, সরকার ক্ষমতায় আসছে ২০০৮ সালে, তৃতীয় মেয়াদেরও প্রায় আড়াই বছর হতে যাচ্ছে। আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার এবং ভিশন ২০২১ রূপকল্প-২১ এর মাধ্যমে জাতিকে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে, বাংলাদেশকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করব, বিশেষ করে নানা জাতীয় খাদ্য যেমন চাল, গম, ভুট্টা উৎপাদন করব।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর এক কোটি ১০ লাখ টন ধান হতো, এখন হয় তিন কোটি ৮৭ লাখ টন। গম এবং ভুট্টাসহ এটা প্রায় সাড়ে চার কোটি টন দানা জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করছি। আমরা অনেকটাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মূল খাদ্য ভাত নিয়ে কোনো হাহাকার নাই। কোনো অভাব বা দুর্যোগ নাই ১২-১৩ বছরে। এখন আমরা চাচ্ছি, কৃষিকে লাভজনক করতে, কৃষিকে আধুনিকীকরণ করতে। মাশরুম অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল, এটার পুষ্টি অনেক বেশি। ওষুধ হিসেবেও সারা পৃথিবীতে এর চাহিদা রয়েছে। আমাদের চাষিরা শুধু ধান করে, ধানের প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। কারণ তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু পাশাপাশি ঘরের মধ্যেই মাশরুম চাষ করা সম্ভব। নারীরা কাজ করতে পারবে। তেমন কোনো শ্রমিকও লাগে না মাশরুম চাষ করতে। আমরা তাদের যদি প্রযুক্তি শিখিয়ে দিতে পারি, প্রশিক্ষণ দিতে পারি, বীজ দিতে পারি, তাহলে ব্যাপকভাবে এটা চাষ করা সম্ভব।

মানুষের আয় বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য মাশরুম একটা সম্ভাবনাময় ফসল। আমরা একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেছি। একনেকে পাঠানো হয়েছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আশাবাদী এ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হবে। এটা বাস্তবায়ন করে সারা দেশে মাশরুম উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জমান কল্লোল ও সাভার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুঞ্জুরুল আলম রাজীবসহ সারাদেশ থেকে আসা মাশরুম চাষিরা।

0 comments on “লাভজনক হিসেবে মাশরুম বাজারজাত করতে কর্মসূচি নেয়া হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *