ভাদ্র মাসে নামে হেমন্ত। খুব গরম, মাঝে মাঝে বৃষ্টি। তাই ভাদ্র মাসের কৃষি ব্যবস্থাপনা হয় একটু অন্যরকম। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক ভাদ্র মাসের কৃষি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে।
প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা
- ভাদ্র মাসের তালপাকা গরমে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করতে হবে পোলট্রি শেডে।
- আর চটের ছালা টিন শেডে রেখে মাঝে মধ্যে পানি দ্বারা ভিজিয়ে দিতে হবে। যেন অধিক গরমে মুরগিগুলো মারা না যায়। সেই সাথে নানা রোগের বিস্তার যেন না ঘটে।
- ভেজা আবহাওয়া আবার কখনো কখনো গরম পোলট্রির ক্ষেত্রে বৃদ্ধি করে গামবোরো রোগের সংক্রমণ। এ রোগের কারণে মুরগির পালকগুলো নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। গা গরম হয় এবং কাঁপুনি দেখা দেয়। সাদা পানির মতো পাতলা পায়খানা করে, সহজে নড়ে না। কোনো চিকিৎসা নেই ভাইরাসজনিত এ রোগের।
- বাংলাদেশে এখনও বিরাজমান গোখাদ্যের সমস্যা। তাই ব্যবস্থা নিতে হবে পতিত জমিতে বাজরা, খেসারি, নেপিয়ার, মটর, ইপিল-ইপিল, গিনি ঘাস লাগানোর।
- যারা দুগ্ধবতী গাভী পালন এবং যারা গরু মোটাতাজাকরণ করবেন তারা অবশ্যই সুষম খাবার সরবরাহ করবেন।
- পানি জমে থাকা এলাকায় জন্মানো ঘাস গবাদিপশুকে খাওয়ানো যাবে না।
- গরু ও ছাগলকে নিয়মিত গোসলের ব্যবস্থা করতে হবে।
- নিয়মিত গোবর চনা পরিষ্কার করা দরকার। বেছে দিতে হবে গরুর গায়ের আঠালি, মাছি, জোঁক পোকামাকড়।
- তড়কা, বাদলা, গলাফুলা রোগ যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেজন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা ভেটেরিনারি সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা
- আস্তে আস্তে পুকুরে সার ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে ফেলতে হবে। জৈব সার ব্যবহার না করে পরিমাণ মতো অজৈব সার ব্যবহার করা দরকার।
- পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
- এখন পুকুরে নতুন মাছ ছাড়ার সময়। পুকুরের জলজ আগাছা মাছ ছাড়ার আগে পরিষ্কার করতে হবে।
- পুকুর জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে সঠিক সংখ্যক সুস্থ সবল পোনা মজুদ করতে হবে।
- চাষকৃত পুকুরে জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা দরকার এ সময়।
- রোগের আক্রমণ থেকে মাছ রক্ষা করতে স্থানীয় উপজেলা মৎস্য অফিসের পরামর্শ নিতে হবে।
- বন্যার কারণে ভেসে যাওয়া পুকুরের মাছ ধরে রাখতেপুকুরগুলোর ১৫ থেকে ২০ মিটার দূরত্বে একটি চটের ব্যাগে ৫ থেকে ৭ কেজি ধানের কুড়া বা গমের ভুসি ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পানির নিচে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে দিতে হবে। ব্যাগটিতে অবশ্যই ছোট ছোট ছিদ্র করে দিতে হবে। খাবার পেলে মাছ পুকুরেই অবস্থান করবে।
- পুকুরের পানি যদি দূষিত হয় তবে ভাইরাস, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে মাছের ক্ষত রোগ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিক ভাবে দেহ ভারসাম্যহীন হবে, শরীরে লাল দাগ দেখা দেবে। পরবর্তীতে ক্ষত রোগে মারা যায়। অধিক আক্রান্ত মাছ উঠিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। প্রতি শতক পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে ১ কেজি চুন ও ১ কেজি লবণ।