সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উৎপাদন বেড়েছে ইলিশের। তাই গ্রামে-গঞ্জেও ইলিশের স্বাদ পৌঁছানো যাবে। এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। রোববার মৎস্য ভবনে আয়োজিত হয় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যত করণীয় বিষয়ক এক কর্মশালা। এই কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
সরকার চাইবে যে আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে ইলিশ উৎপাদন।
ইলিশের উৎপাদন এমন অবস্থায় যাবে যেন তা গ্রাম-গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব মানুষ স্বাদ নিতে পারেন সুস্বাদু ইলিশের।
যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে পরিপূর্ণতার সঙ্গে ইলিশ খেতে পারেন।
তিনি আরও বলেন সারা বিশ্বে আমাদের স্বত্বাধিকার রয়েছে সবচেয়ে সুস্বাদু ও সর্বোচ্চ ইলিশ মাছ আহরণে।
সে জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করি ইলিশ রক্ষার জন্য।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার গত ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, কেনা-বেচা ও বিনিময় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শতাধিক জেলে ইলিশ ধরতে গিয়ে আটক হয়েছেন, গুনেছেন জরিমানাও।
প্রজনন মৌসুমে এই নিষেধজ্ঞা কয়েক বছর ধরে দিয়ে আসছে সরকার।
আর এর ফলে ইলিশের উৎপাদনও বেড়েছে বহুগুণ।
মন্ত্রী জানান যে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রতিকূলতা লক্ষ্য করেছেন তিনি।
কিছু দুষ্ট লোক তাদের অসাধু পরিকল্পনা ও চিন্তা-চেতনা বাস্তবায়ন করতে চান।
এ জন্য দরিদ্র-অসহায় জেলেদের নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে নামাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
নিষেধাজ্ঞার সময় মৎস্য আহরণে যাওয়া লোকেদর বড় অংশ অন্যের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয় বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শতভাগ সফল করতে হবে।
আর তাই নতুন নতুন নির্ধারণ করতে হবে সৃজনশীল কর্মপন্থা।
জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
মৎসজীবী সংগঠনগুলোকে আরও বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে
মৎস্যজীবী বিভিন্ন সংগঠনগুলো যেন আরও বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে সে জন্য নীতিনির্ধারণ করতে হবে।
মা ইলিশ সংরক্ষণে আরও ভালোভাবে ভবিষ্যতে অভিযান পরিচালনা করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তার মতে ইলিশ মাছ হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে সুস্বাদু ও ভালো মাছ।
সরকার ইলিশ মাছ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, এর নিরাপদ আশ্রয় ও নিরাপদ প্রজননের জন্য নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, ইলিশের পরিসর বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব ধরনের আগ্রহ এবং পরিকল্পনা রয়েছে।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তরের কর্মকর্তারাসহ সকলের।
কর্মশালায় দেশের বিভাগীয় মৎস্য দপ্তরের উপপরিচালকরা মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের কার্যক্রম তুলে ধরেন।
এতে বলা হয়, এ বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের ১ হাজার ৮৯২টি মোবাইল কোর্ট ও ১৫ হাজার ৩৮৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
৮৮৪ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক করা হয় ।