আমাদের একটি গরুর দুধ উৎপাদনের খামার আছে। অনেক সময় গরুর ওলান শক্ত হয়ে দুধে রক্ত ও পুজ আসে। ধারনা করছি গরুর ওলান ফোলা রোগ হইছে। গরুর ওলান ফোলা রোগ কি কেন হয় ?
গরুর ওলান ফোলা রোগ দুধ উৎপাদনে প্রধান অন্তঃরায়। গবাদিপশুর এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ সমুহের মধ্যে অন্যতম।
ওলান ফুলা, ঠুনকো রোগ, থানফুলা, থানপাকা, পালান পাকা বিভিন্ন নামে গ্রাম অঞ্চলে এ রোগ কে চিনে থাকে।
ওলান ফোলা রোগের কারন
বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক, রিকেটসিয়া, মাইকোল্পাজমা ইত্যাদি জীবানু দ্বারা ওলান ফোলা রোগ সংঘটিত হয়।
ওলান প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ :
চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করাই উত্তম পন্থা, একটি ডেইরি ফার্মে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পন্থা অনুসরণ করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
১। বাঁটের স্বাস্থ্যসম্মত বিধিব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে। ভালো স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান হতে হবে। জীবাণুমুক্ত দুধ দোহনব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে। ওলান ও বাঁটের স্বাস্থ্য ও যেকোনো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
খুব দ্রুত এ রোগ শনাক্ত করতে হবে এবং দ্রুত উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে হবে। অসুস্থ গাভীকে আলাদা জায়গায় রাখতে হবে।
২। শুষ্ক ও গর্ভবর্তী গাভীকে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ও সেবা দিতে হবে। গাভীর ক্ষেত্রে (বকনা বাদে) দুধ দোহনের শেষ দিনে বাঁট সিল করে দিতে হবে।
বার বার এ রোগে আক্রান্ত (২-৩ বার) গাভী, (Chronically ofteted) যেগুলোকে সম্পূর্ণ ভালো করা সম্ভব হচ্ছে না সেগুলোকে বাতিল (Culling) করতে হবে। এ জাতীয় অসুস্থ গাভী রোগের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে ফলে খামারের সুস্থ গাভীতে ছড়াতে সাহায্য করবে। সফল জনকভাবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণের এটাই একমাত্র পন্থা।
৩। দৈনিক দুধ দোহনের মেশিন পরীক্ষা করতে হবে ও খামারের ওলান প্রদাহ রোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
একটি দুগ্ধ খামারে ওলান প্রদাহ রোগ প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত স্বাস্থবিধি মেনে চলতে হবে-
৪। গাভীকে কাঁচা ঘাসসহ পুষ্টিকর সুষম খাদ্য দিতে হবে;
শেডের মেঝে পরিষ্কার করে ২-৩ দিন পর পর Disinpectant দিয়ে Sprey করতে হবে। মেঝেতে কোনো প্রকার গর্ত থাকা যাবে না।
বিজ্ঞান সম্মতভাবে গাভীর শেড বা ঘর তৈরি করতে হবে।
৫। দুধ দোহনের আগে ওলান ধুয়ে নিয়ে হবে এবং প্রতিটি গাভী দোহনের আগে দোহনকারীর হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। অসুস্থ গাভীকে সবার শেষে দোহন করতে হবে।