ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই হিসেবে ক্ষিরসাপাত ও ফজলির পর এবার আশ্বিনা ও ল্যাংড়া আমের দ্রুত স্বীকৃতি চায় আমের রাজধানীখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় আশ্বিনা-ল্যাংড়া আমের জিআই এর দাবি তোলা হয়।
এ সময় ফজলি আম জিআই সনদ পাওয়ায় এ আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়। সভায় আমচাষি, রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী ও জেলায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা ২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পক্ষে আশ্বিনা ও ল্যাংড়া আমের জিআই হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করার পর এখনও এ নিয়ে কোনো ফলাফল না আসায় দ্রুত জেলার সংশ্লিষ্টদেও সরব হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমের উৎপাদন ও ইতিহাস-ঐতিহ্য বিবেচনায় নিয়ে এই দুটি আমের জিআই সনদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে দ্রুত দেওয়া উচিত আর এজন্য জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কারণ এতে আমের উৎপাদন, সম্প্রসারণ ও বাজারজাতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে জিআই সনদ।
জেলায় ৪০ কেজি থেকে ৫২ কেজিতে এক মণ হিসাবে আম বিক্রি, অর্থনৈতিক সুফল ও পরিচিত পেতে জিআই সনদপ্রাপ্ত ক্ষিরসাপাত ও ফজলি আমের জিআই সনদ পাওয়ার পরও ট্যাগ লাগানোর ব্যবস্থা না থাকার দ্রুত সমাধান, আলাদাভাবে ডিজাইন করে লোগো করা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিকল্পিত একক বাগান করা, বিদেশে আম রপ্তানিতে নানা সমস্যা ও সমন্বয়হীনতা দূর করার পাশাপাশি জেলায় আম উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া, স্থানীয়ভাবে আম পরীক্ষার ব্যবস্থা, আমের আঁটি থেকে তেল উৎপাদনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমের বাজার সম্প্রসারণ ও প্রসারে এবছর জেলায় আম উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আশ্বিনা ও ল্যাংড়া আমের জন্য জিআই সনদে করা আবেদনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জেলার আম সম্পদের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করলে এর উন্নয়নে কৃতিত্ব ও সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। আম সম্পদের উন্নয়নে জেলার সব দপ্তরকে নিয়ে সভা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে আমের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার অনুরোধ করা হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আহমেদ মাহবুব-উল-আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এরফান আলী, পরিচালক শহিদুল ইসলামসহ গবেষক জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট আবু হাসিব, জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব জেলার পক্ষে আশ্বিনা ও ল্যাংড়া আমের জিআই হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করে।
সূত্রঃ বাংলানিউজ২৪