সামনেই শীতকাল। আর এই সময়েই পাওয়া যায় নানা ধরনের সবজি। সে সকল সবজি রোপনের সময় এখন। কিন্তু সময় এলেও শীতকালীন ফসলের চারা রোপণ করা যাচ্ছেনা ঠাকুরগাঁও জেলায়। চাষিরা আগাম ফুলকপির চারা তৈরি করে রাখলেও তা জমিতে রোপণ করতে পারছেন না। আর এটি সম্ভব হচ্ছেনা কেবল সারের অভাবে। এমওপি বা মিউরেট অব পটাশ সারের অভাবে চারা রোপণ করতে পারছেন না চাষিরা। এতে তাদের মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুলকপির চারা লাগানোর আগেই জমিতে এমওপি সার দিতে হয়।
কিন্তু এমন প্রয়োজনীয় সময়ে কোথাও সার পাচ্ছেন না তারা।
তারা জানান দুই-চার দিনের মধ্যে সার না পেলে ফুলকপির চারাগুলো নষ্ট হবে।
তাঁর মতো বেশির ভাগ কৃষকই এখন সার পাচ্ছেন না।
কৃষি বিভাগ জানায়, আগাম রবি সবজির চারা রোপণের উপযুক্ত সময়ই এখন।
এই সময় মূলত জমি তৈরির জন্য অ-ইউরিয়া সারের ব্যবহার হয়।
অন্যদিকে অনেক কৃষক একটু দেরিতে আমন ধান রোপণ করেছেন।
এ মুহুর্তে তাঁদের খেতেও উপরি প্রয়োগের জন্য অ-ইউরিয়া সার প্রয়োজন।
তা ছাড়া বিভিন্ন ফলের বাগানেও এখন অ-ইউরিয়া সার প্রয়োগের জন্য এই সময়টি উপযুক্ত।
অ-ইউরিয়া সারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সার হচ্ছে এমওপি।
আমাদের দেশে সাধারণত অ-ইউরিয়া সার বিএডিসি আমদানি করে।
তবে আগস্ট মাসের এমওপি সারের অতিরিক্ত বরাদ্দ ও সেপ্টেম্বর মাসের নিয়মিত বরাদ্দ বিসিআইসি পরিবেশকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
জেলায় বিসিআইসির ৬৩ জন পরিবেশক আছেন বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
গত আগস্ট মাসে তাঁদের মধ্যে এক হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এই সার নিজ খরচে যশোরের নওয়াপাড়া থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয় পরিবেশকদের।
তআদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জন পরিবেশক ৩৫৮ মেট্রিক টন সার উত্তোলন করেছেন।
অন্যদিকে চলতি সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ৮৫৭ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৫৭ জন পরিবেশক এতে টাকা জমা দিয়েছেন।
তবে এখনো কোনো পরিবেশকই সেপ্টেম্বর মাসের বরাদ্দের সার হাতে পাননি।
এদিকে বালিয়াডাঙ্গীর লাহিড়ীহাটে শাহ আলম ট্রেডার্সের বিক্রয়কেন্দ্রে কৃষক পর্যায়ে সার বিক্রি নিয়ে কিছু গোলমালের ঘটনা ঘটে।
জানা যায় এক কৃষককে অতিরিক্ত ১০ বস্তা এমওপি সার দিতে অস্বীকৃতি জানালে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
ওই কর্মকর্তা বর্তমানে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক আবদুল আজিজ।
তিনি বলেন, দেশে সারের সংকট নেই।
তবে কৃষকরা এক ধরনের শঙ্কায় শঙ্কিত।
তাই অনেক কৃষক আগাম সার সংগ্রহে রাখছেন বলে তিনি মনে করেন।
কেউ যেন চাহিদার বেশি সার নিতে না পারেন, তা কড়াভাবে নজরে রাখা হচ্ছে।
জেলায় অতিরিক্ত এক হাজার টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।