স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি ‘শিটি মরিচ’ হিসেবে পরিচিত চিকন আকৃতির মরিচ। দেখতে যেমন সুন্দর, ঝালও বেশ। কিন্তু চকচকে এই গাছের মরিচের দাম মিলছে না। কৃষকরা বলেন শিটি মরিচ সস্তায় বিক্রয় করছেন তারা। প্রচন্ড ঝাল এই মরিচের, কিন্তু সে তুলনায় শিটি মরিচ সস্তায় বিক্রয় হচ্ছে।
দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের জগৎপুর, রানীপুকুর, মির্জাপুর, কুকড়িবন ও কামদেবপুর এলাকায় এর চাষ হয়।
প্রতিবছর দাম ভালো হয় তাই কৃষকেরা এই মরিচ চাষে আগ্রহ দেখান।
তবে চলতি মৌসুমে এর দাম অনেক কম তাই চাষিরা লোকসান গুণছেন।
সাধারণত এই মরিচের বীজ শ্রাবণ মাসের শুরুতে বপন করা হয়।
আশ্বিনের শুরুতে উঁচু জমিতে চারা লাগানো হয়।
অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়ে বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে ওঠে এটি।
পৌষ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিন দফায় মরিচ তোলা হয়।
পাকা মরিচ বিক্রি করতে হয় মাঘ মাসে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে জগৎপুর, রানীপুকুর ও কামদেবপুর এলাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা হয়।
রাস্তার দুই পাশ জুড়ে শিটি মরিচের খেত।
পাইকাররা খেতের পাশে বস্তা আর ডিজিটাল পাল্লা নিয়ে বসেছেন।
মরিচ কিনতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে এসেছেন পাইকাররা।
একজন চাষি বলেন, এবার তিনি আড়াই বিঘা জমিতে মরিচ লাগিয়েছেন।
বর্ষা দেরিতে শেষ হয়েছে। তাই মরিচ লাগাতে দেরি হয়েছে, ফলনেও দেরি হয়েছে।
গতবছর প্রতি বিঘায় ৬০ মণের বেশি মরিচ সংগ্রহ করেছেন।
প্রতি কেজি মরিচে গতবছর ৭০-৮৫ টাকা পেয়েছেন।
কিন্তু এবার প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি করতে পারছেন মাত্র ২৭ টাকায়।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম।
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় শিটি মরিচের আবাদ হয়েছে।
শুকনা অবস্থায় শিটি মরিচের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন মেট্রিক টন।
তিনি আরও বলেন তুলনামূলকভাবে এই মরিচের রোগবালাই হয় কম।
শিটি মরিচের আবাদ এই এলাকায় ঐতিহ্যগত ভাবে চলে আসছে বলে জানান তিনি।
সেই সাথে তিনি আরও বলেন কৃষি বিভাগ নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন কৃষকদের।
এর কারণে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে এই মরিচ চাষ করছেন কৃষকেরা।
মরিচ খেতে সাথি ফসল ফলানোতে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে কৃষকদের।
আর এভাবে চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা।