প্রতিটি স্কুলে একটি বাগান না থাকলে তা বেশ বেমানান লাগে। আর স্কুলের শিক্ষক যখন প্রকৃতিপ্রেমী তখন স্কুলে বাগান থাকাটা যেন বাধ্যতামূলক। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক সুকুমার রায় এমনটাই করেছেন। সহকারী শিক্ষকের একান্ত প্রচেষ্টায় ছাদবাগান এখন রোল মডেল এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উৎসাহের বিষয়।
নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় সুকুমার রায় গড়ে তুলেছেন একটি ছাদ বাগান। তার এই ছাদ বাগান খানি স্কুলের একাডেমিক ভবনে প্রায় চার হাজার স্কয়ার ফিটের ছাদে। ওই ছাদে স্থান পেয়েছে প্রায় কয়েশত প্রাজাতির উদ্ভিদ। ফুল গাছসহ বনজ, ফলদ এবং বিভিন্ন সবজির গাছও বিদ্যমান।
বাগানে ঠাই পেয়েছে নানান জাতের উদ্ভিদ
সরাসরি গিয়ে দেখা যায় যে, সুকুমার রায় এই ছাদ বাগানে ঠাঁই পেয়েছে অসংখ্য প্রজাতির সবজি গাছ। এমনকি কলাগাছও সেখানে বেড়ে উঠেছে পরম যত্নে। বিভিন্ন রকম ফলের গাছ যেমন পেয়ারা, আম, আতা, কমলা, বাতাবি লেবু, মালটা, পেঁপেসহ আরও অনেক উদ্ভিদ।
গোলাপ, রঙ্গন, গন্ধরাজ, দোলন চাঁপা, কাঠ গোলাপ, মাধবী লতা রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির জবা, চেরি, এলমুন্ড, টগরসহ নানা প্রজাতির মৌসুমী ফুল এর উপস্থিতি চোখে পড়ে ।
এছাড়া রয়েছে ভেষজ উদ্ভিদ। যাদের মধ্যে এ্যালোভেরা, তুলসী, থানকুনী, পাথরকুচিসহ আরও অনেক গাছ উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষক সুকুমার রায় বলেন, তার বাগানে প্রতিনিয়তই বেড়েই চলছে গাছের সংখ্যা। সেখান থেকে গাছের প্রজাতি নিয়ে যান শিক্ষার্থীসহ অনেক দর্শনার্থীই।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি ফুলে ফলে স্কুলের চারপাশ সাজানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন । বড় আকারের বাগান গড়ে তুলতে চান। বাগান ঘিরে স্কুল থাকবে এই স্বপ্ন দেখেন তিনি।
এই ছাদ বাগান ২০১৬ সাল থেকে তিনি তৈরি করেন। তিলে তিলে সাজানো এই বাগান সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষক সুকুমার রায়। সহকর্মী, শিক্ষার্থীসহ সকলেই তাকে এ কাজে আমাকে ব্যপক সহায়তা করেছেন বলে তিনি জানান।
যখন যেখানে যে প্রজাতির গাছ পেয়েছেন তাই সংগ্রহ করেছেন তিনি। কিছু কিছু উদ্ভিদ তিনি বিভিন্নস্থানের বন-জঙ্গল থেকে তুলে এনেছেন। তার এই কাজে প্রথম প্রথম অনেকে হাসির খোরাকি হিসেবে ব্যবহার করলেও দমাতে পারেনি। এই ছাদবাগান তার কাছে তার সন্তানের মত।
প্রত্যেক মানুষ চাইলে তাদের ছাদকে এভাবে সাজাতে পারেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এতে প্রাকৃতিকভাবে েএবং অর্থনৈতিক ভাবেও আমরা লাভবান হতে পারি বলে তিনি মনে করেন। তার উৎসাহে তার বিভিন্ন শিক্ষার্থী নিজেদের বাড়িতে বাগান তৈরি করেছেন।
সুনাম ও গর্বের বিষয় ছাদবাগান
কথা হয় পাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরনী কান্ত রায় এর সাথে। তিনি জানান সহকারী শিক্ষক সুকুমার রায় নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় কাজ শুরু করেন। যার ফলাফল আজকের এই ছাদ বাগান। এই বাগান তাদের জন্য সুনাম ও গর্বের বিষয়।