বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। একই সাথে এদেশের মানুষের প্রিয় একটি খাবার মাছ। আমিষের উৎস এই মাছে অনেকেই আবার জিবীকার উৎস খুজে পান। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ চাষ যেমন জনপ্রিয়, তেমনি ক্রমশই বাড়ছে মাছের চাষ। এমনকি শরীয়তপুর জেলাতে মাছের চাষ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে শরীয়তপুর জেলাতে মাছের চাষ বেড়েছে প্রায় ১২০ শতাংশ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত প্রণব কুমার কর্মকার। তিনি জানান, মাছ চাষ ও উৎপাদনের জন্য শরীয়তপুর জেলা একটি উপযোগী স্থান। মানুষ সহজে পুকুর ও প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করে লাভবান হতে পারে।
মাছের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১২০ শতাংশ
জেলা মৎস্য বিভাগের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গত ১০ বছরে এ জেলায় মাছের উৎপাদন ১২০ শতাংশ বেড়েছে। মানুষ ক্রমশই দিনে দিনে আরও বেশি মাছ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে।
২০১১ সালে মাছের উৎপাদন হয়েছিল ১২ হাজার ১৯৫ টন। ২০২০ সালে এটি বেড়ে হয়েছে ২৬ হাজার ৭৬০ টন। অর্থাৎ ১৪ হাজার ৫৬৫ টন উৎপাদন বেড়েছে।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই মানুষ মাছ চাষের সাথে যুক্ত।
এমনকি বাড়ির লাগোয়া জলাশয়ে অনেকেই চাষ করছে মাছ। জেলায় বিভিন্ন প্লাবণ ভূমি ও পুকুর জলাশয়ের আধিক্য প্রচুর।
যার ফলে মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। এমনটাই ধারণা করেন, মৎস বিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মাছ চাষের জন্য ২ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমিতে প্রায় ১৫ হাজার ১৮২টি পুকুর আছে।
২২৫টি প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করা হয় যার পরিমাণ ২৪ হাজার ৯২০ হেক্টর জমি।
এছাড়া ১ হাজার ২৭ হেক্টর জমিতে ৩৩৪টি ধানক্ষেতে ও ৪ হেক্টর জমিতে ৩০টি গলদা চিংড়ি চাষের হ্যাচারি আছে।
অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদন হয় পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর ১৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর এলাকায়।
জেলার মাছের চাহিদা প্রায় ২৫ হাজার ৩১৬ টন। এই চাহিদা পূরণে মাছ উৎপাদন করছেন ১৪ হাজার ৩৭৯ জন চাষি।
তাদের সাথে আরও রয়েছে ৩২ হাজার ৩২৪ জন মৎস্যজীবী।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার আরও বলেন, জেলার পুকুর ও প্লাবনভূমিতে মাছ চাষ করে খুবই লাভজনক হতে পারে।
অনেকেই বেকারত্ব দূর করছেন মাছ চাষ করে । চাছ চাষ ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত জেলার অন্তত ৪৬ হাজার মানুষ।