২২ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও জমে উঠেছে লক্ষ্মীপুরের মেঘনার তীরের সব মাছঘাট। আড়তে প্রাণ ফিরেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায়।গত সোমবার মধ্যরাত থেকে মেঘনায় মাছ ধরা শুরু হয়েছে। জেলেরা জানান, ভালো পরিমাণেই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রায় সবগুলোই ডিমওয়ালা মাছ।
সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, কমলনগরের মতিরহাট, লূধুয়া ও নাছিরগঞ্জের মাছঘাটগুলোতে গত মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে যাওয়া হয়।
সেখানে দেখা গেছে, ব্যাপক ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম প্রতিটিতেই।
জেলেরা ঘাটে যখনই ইলিশ নিয়ে আসছেন ঠিক তার পরমুহুর্তেই সব ইলিশ মাছ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলা ছাড়াও রামগতির চেয়ারম্যানঘাট, বড়খেরী, চর আলেকজান্ডার, বাংলাবাজার, জনতাবাজার, চরকালকিনি, সাজু মোল্লারহাট, আলতাফ মাস্টাররঘাটসহ জেলার ১৬ ঘাট এ খবর নেয়া হয়।
সকল হাট থেকে এমন জমজমাট কেনাবেচার খবর পাওয়া গেছে।
মজুচৌধুরীরহাটের জেলে কালাম মাঝি, ইউনুছ মাঝি ও মো. সোহেল।
তারা জানালেন যে, ইলিশ রক্ষায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল গত ৪ অক্টোবর থেকে।
সেই নিষেধাজ্ঞা মেনেই তারা ২২ দিন নদীতে নামেননি।
গত ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।
এরপর থেকেই তারা মাছ ধরা শুরু করেছেন।
তাদের দেয়া তথ্য থেকে জানা যায় যে, ইলিশ আগের তুলনায় জালে অনেক ধরা পড়ছে।
এসব ইলিশ থেকে দামও ভালো পাচ্ছেন।
সাড়ে চার হাজার টাকায় এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।
আর এক কেজির কম ওজনের মাছও আছে।
এক কেজির কম ওজনের এক হালি মাছ বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
তবে জেলেরা কিছু অভিযোগও করেছেন।
তাদের কড়া অভিযোগ যে, মাছ ধরাতে নিষেধাজ্ঞার সময়টা সঠিক হয়নি।
নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে ডিম ছাড়তে পারেনি মা ইলিশ।
আর তাই এ কারণে প্রায় সব মাছে ডিম রয়ে গেছে।
এবার ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় সারা দেশে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা।
মা ইলিশ যেন নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে তার জন্য এ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অনেক কে আটক ও জেল জরিমানা করা হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
জেলা মৎস্য কর্মকতা আমিনুল ইসলাম জানান, প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।
এতে অনেক খুশি তারা।
গত বছর শীতের তুলনায় এবার মাছ আরও বেশি ধরা পড়বে।
এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার টন নির্ধারন করা হয়েছে।