বিশ্বের ৬২টি দেশে ভেনামি চিংড়ি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়ার দেশে রয়েছে ১৫টি। বিশ্বে চিংড়ি বাণিজ্যের ৭৭ শতাংশ দখল করে আছে ভেনামি চিংড়ি। বাগদা চিংড়ির তুলনায় দাম কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে এর চাহিদা বেশি। এশিয়ার চিংড়ি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশে এত দিন বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ ছিল।
গত বুধবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হেমায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত ভেনামি চিংড়ির চাষের অনুমতিপত্র মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ভেনামি চিংড়ির চাষের জন্য ‘বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ নির্দেশিকা ও অনুমতি দেয়া হয়।
পরীক্ষামূলক ভেনামি চিংড়ি চাষে সফল চাষি ও খুলনার চিংড়ি রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে এর বাণিজ্যিক চাষের দাবি করে আসছিলেন। অবশেষে তাদের সে চাওয়া পূরণ হওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। এর আগে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল হোয়াইট গোল্ড বা সাদা সোনা নামে পরিচিত ভেনামি চিংড়ি চাষ খুলনার পাইকগাছায় পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বেসরকারি সংস্থা সুশীলন এবং এমইউসি ফুডসকে ভেনামির পরীক্ষামূলক চাষের অনুমতি দেয় সরকার। তবে নানা সংকটে দীর্ঘদিন ধরে তারা চাষাবাদ শুরু করতে পারছিল না। পরীক্ষামূলকভাবে চাষের জন্য থাইল্যান্ড থেকে এক মিলিয়ন ভেনামি চিংড়ি আমদানি করে খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় নেয়া হয়। সেখান থেকে চিংড়ি পোনা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের পরীক্ষাগারে নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর পাইকগাছার লবণপানি গবেষণা কেন্দ্রের পুকুরে ছাড়া হয়।
বাংলাদেশের বাগদার চেয়ে ২০ গুণ বেশি উৎপাদন ক্ষমতার উচ্চ ফলনশীল ভেনামি চিংড়ির পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছেন চাষিরা। অর্ধেক কম খরচে বেশি উৎপাদন হয়েছে এ জাতের চিংড়ির। এ অবস্থায় ভেনামি চাষে বিপুল সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।