ব্রয়লার হলো মুরগির মাংস উৎপাদনের জন্য এক বিশেষ ধরনের মুরগি যাদের দেহের ওজন ৩০ থেকে ৩৫ দিনে দেড় থেকে পৌনে দু’কেজি হয়। এদের মাংস খুব নরম ও সুস্বাদু।
মুরগি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুণগতমানের ব্রয়লার বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে।এই মুরগীর জন্য খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে এমন ব্রয়লার মুরগির জাত সঠিক ভাবে নির্বাচন করতে হবে। কেননা, সব মুরগি সমান ভাবে ওজন বাড়ে না।
ব্রয়লারের জাত
সেভার স্টার ব্রো, ভেনকব, হাবার্ড হাইইল্ড, সেভার মিনি ব্রো, এভিয়ান, কব্ ১০০, সেভারট্রাপিক ব্রো, হাবার্ড ক্লাসিক, কব্ ৫০০, ইসা- ডেভেট ই-৭৫৭, সি এন্ড এম ক্লাসিক, হাইসেক্স-জি, ইসা-এমপিকে-৩০, হাবার্ড হাই ওয়াই, রস-৩০৮, আরবার একরস, কাছিলা হাবচিকস্, হারচিক হাইব্রো, লোমান মিট, ইন্ডিয়ান রিভার।
ব্রয়লার পালনের পদ্ধতি
লিটার, মাচা এবং খাঁচা পদ্ধতিতে ব্রয়লার পালন করা যায়।
বাচ্চা পিছু জায়গা দিতে হবে ৪৫ বঃ সেমি (৭ বাঃ ইঞ্চি)।
ফ্লোরে পালন করলে প্রতি বর্গমিটারে (১বর্গ মিটার=১০.৭৬ বর্গফুট) ১০ থেকে ১২টি ব্রয়লার এবং মাঁচা তৈরি করে পালন করলে প্রতি বর্গমিটারে ১৫টি ব্রয়লার পালন করা যাবে।
ব্রয়লার মুরগির (broiler chicken) বাসস্থান
১। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের পর্যাপ্ত সুবিধা থাকতে হবে এবং আরামদায়ক পরিবেশ প্রদান করতে হবে ।
২। উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে যেন বন্যার সময় পানিতে ডুবে না যায়। ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং মাংস ও ডিম বাজারজাত করার সুবিধা থাকতে হবে।
৩। খারাপ আবহাওয়া থেকে হাঁস-মুরগিকে রক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৫। চারপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
৬। খোলামেলা ও নিরিবিলি পরিবেশ হতে হবে।
৭। বিভিন্ন প্রকার সংক্রামক ও ছোঁয়াচে রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জীবজন্তুর আক্রমণ থেকে থাকতে রক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯। চোরের উপদ্রব থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১০। খাবারের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ব্রয়লার মুরগির খাদ্য ব্যবস্থাপনা
এই মুরগীর উৎপাদনে ৬০ থেকে ৬৫% খরচ খাবারের পেছনে ব্যয় হয়। সুষম খাদ্যে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় জিনিস খাওয়ালে অতিরিক্ত দাম পাওয়া যায় না বিধায় সুষম খাবারের প্রতি জোর দেয়া আবশ্যক।
বয়স ভেদে খাদ্য প্রদানঃ
প্রি-স্টার্টার ১- ১৪ দিন
স্টার্টার ১৫-২৬ দিন
ফিনিসার-(১) ২৭-৩৫ দিন
ফিনিসার-(২) ৩৬ দিন থেকে বাজারজাতকরন পর্যন্ত।
ব্রয়লার মুরগীর (broiler chicken)খাদ্যে আমিষ ব্যবহার :
বিভিন্ন জাতের খাদ্যের মধ্যে ব্রয়লার খাদ্যে আমিষের ব্যবহার বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হয়। আমিষ খাদ্য ব্রয়লার মুরগীর শারীরিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং খাদ্য রূপান্তর হার বৃদ্ধি করে।
ব্রয়লার খাদ্যে প্রথম ২ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত শতকরা ২৪ ভাগ আমিষ ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এই প্রয়োজনীয়তা পর্যায়ক্রমে কমতে থাকে।
ব্যবহার ক্ষেত্রে খাদ্যে আমিষ ব্যবহারের হার বার বার পরিবর্তন বাস্তব সম্মত নয়।
খাদ্য ব্যবস্থাপনায় গুরত্বপূর্ন কিছু বিষয়ঃ
১। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ার জন্য ব্রয়লারের দরকার একই সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে আমিষ এবং শক্তি বা বেশি তাপ দিতে পারে এমন খাবার। ০-৬ সপ্তাহের বাচ্চার জন্য সুষম খাদ্যে থাকবে আমিষ ২২.২৪% , বিপাকীয় তাপ ২৯০০-৩০০০ কিলোক্যালরি। বাজারজাত করণের আগ পর্যন্ত ব্রয়লার মুরগির সুষম খাদ্যে থাকবে এনার্জি ৩০০০/৩২০০০ কিলো ক্যালরি।
২। আমিষ বিশেষ করে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলির মধ্যে লাইসিন এবং মিথিওনিন খবুই গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এরা মুরগির বৃদ্ধির জন্য সাহায্য করে।
৩। ভিটামিন A, B2, D3, B12 এবং K ভীষন প্রয়োজনীয়।
৪। পটাসিয়াম, আয়োডিন, ম্যাঙ্গানিজ সালফেট এবং জিঙ্ক কার্বনেট পৃথকভাবে ভাল করে মিশিয়ে মুরগিকে খাওয়ানো উচিত।
খাবার প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতাঃ
▶ গ্রীষ্মকালে দিনের ঠান্ডা সময়ে (সকাল-সন্ধ্যা) খাদ্য প্রদান করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
▶ সম দূরত্বে পর্যাপ্ত সংখ্যক খাদ্য পাত্র স্থাপন করতে হবে।
▶ খাদ্য পাত্র অর্ধেকের উপর ভর্তি হলে খাদ্য অপচয় বৃদ্ধি পায়।
▶ পাত্রের তল মুরগির পিঠ সমান উচ্চতায় রাখতে হবে।
▶ খাদ্যে প্রয়োজনমতো আমিষ, শক্তি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, এমাইনো এসিড সরবরাহ করে খাওয়াতে হবে।
ব্রয়লার মুরগির (broiler chicken)পানি ব্যবস্থাপনা:
▶মুরগি সাধারণ তাপমাত্রায় তার খাদ্যের দ্বিগুণ পরিমাণ পানি পান করে।
▶পর্যাপ্ত সংখ্যক পানি পাত্র সরবরাহ করা জরুরী।
▶গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা পানি সরবরাহ খাদ্য রূপান্তর হার বৃদ্ধি করে।
▶পানির পাত্র মুরগির চোখ সমান উচ্চতায় স্থাপন করতে হয়।
▶আবহাওয়ার তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে মুরগির পানি পিপাসা ও পানি গ্রহণের হার অধিক হয়।
▶পানি জীবাণুমুক্ত করার জন্য পানির সাথে ক্লোরিন ব্যবহার করা হয়।
ব্রয়লার মুরগির আলোক ব্যবস্থাপনা:
বাণিজ্যিক ব্রয়লারকে ২৩ ঘন্টা আলো সরবরাহ করতে হয়। এই আলো দিনের আলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবস্থাপনা করতে হবে।
ব্রয়লার পালন পদ্ধতি:
১. অল-ইন-অল-আউট (all in all out) পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত।
২. অনেক ক্ষেত্রে মাল্টিপল রেয়ারিং (multiple rearing) পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়।
ব্রয়লার পালন ব্যবস্থাপনাঃ
- দুই ফ্লকের মাঝে কমপক্ষে ১৪ দিনের বিরতি দেয়া। সম্পূর্ন ক্লিনিং এর পর কমপক্ষে ৩ দিন বিরতি দিয়ে পরবর্তী ফ্লক তোলা।
- পুরাতন ব্যাচের বর্জ্য যথাযথভাবে সরিয়ে খুব ভালভাবে শেড ক্লিনিং করে অতঃপর পরবর্তী ব্যাচের বাচ্চা উত্তোলন।
- একই ফার্মে বিভিন্ন বয়সের মুরগি পালন না করা।
- সঠিক পন্থায় ব্রুডিং করা – পর্যাপ্ত তাপ, বায়ু চলাচল, ফিড, পানি, জায়গা, ইত্যাদি প্রদান।
- একটি ব্রুডারে বা গার্ডে; ইলেকট্রিক ব্রুডারের ক্ষেত্রে ২৫০-৩০০ মুরগির বেশি পালন করা উচিত নয়। গ্যাস ব্রুডারে (কোম্পানী অনুযায়ী) প্রতি গার্ডে ৫০০-১০০০ মুরগি পালন করা যেতে পারে।
- কোনভাবেই মুরগি বা মুরগির বাচ্চা যেন পানিশূন্যতায় বা ডিহাইড্রেশনে না ভোগে সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।
- আবহাওয়া অনুযায়ী প্রতি ১-৩ দিন পর পর একটু একটু করে মুরগির জায়গা বাড়াতে হবে যেন তাপ, খাদ্য, পানি গ্রহন, চলাচল এবং বিশ্রামের জন্য মুরগি পর্যাপ্ত জায়গা পায়।
- মুরগির ঘরের পর্দা অবশ্যই সবসময় নিচে আটকানো থাকবে। পর্দা নিচ হতে উপর দিকে উঠা-নামা করবে। মনে রাখতে হবে মুরগির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল বাতাস চলাচল বা ভেন্টিলেশন।
- সম্পূর্ন পালক না হওয়া পর্যন্ত এবং অত্যাধিক গরমের সময় ছাড়া অন্যান্য সময় মুরগির গায়ে সরাসরি বাতাস দেয়া যাবে না।
- ৩-৫ দিন বয়স হতে অপেক্ষাকৃত হালকা বা দুর্বল বাচ্চাগুলোকে আলাদা করা । ৭-৮ দিন বয়স হতে সম্পুর্নভাবে ছোট-বড় মুরগি বাছাই বা গ্রেডিং শুরু করা।
- মুরগির শেডে অবশ্যই ছোট-মাঝারি-বড় ৩ টি গ্রেডে মুরগি পালন করা।
- সঠিক ভাবে ব্রুডিং, গ্রেডিং ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা করলে ৭ম দিনে গড় ওজন প্রায় ১৭০-২০০ গ্রাম হবে এবং ১৪ দিনে গড় ওজন হবে ৪২৫-৫০০ গ্রাম এবং শেডে তেমন কোন ছোট-বড় মুরগি থাকবেনা।
- সর্বদা বিশুদ্ধ পানি ও সুষম খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
- ব্রুডিং চলাকালীন সময়ে খাবার পাত্র কখনও খালি রাখা যাবে না; খাদ্যের অপচয় রোধে পাত্রের ১/৩ অংশে খাবার প্রদান করতে হবে।
- প্রথম ৭ দিন সপ্তাহে ২ বার এবং ৮ দিন বয়স হতে প্রতিদিন একবার সম্পূর্ন খাবার শেষ হবার পর খাবার পাত্র পরিষ্কার করে নতুন খাবার দিতে হবে।
- ড্রিংকার মুরগির গলা বরাবর এবং ফিডার মুরগির পিঠ বরাবর উচ্চতায় রাখতে হবে যেন মুরগি স্বাচ্ছ্যন্দে পানি ও খাবার খেতে পারে।
- বড় মুরগির ক্ষেত্রে প্রতি ৪ ফুটের মাঝে অবশ্যই ফিডার ও ড্রিংকার থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত গরমের সময় দুপুরে ২-৩ ঘন্টা খাবার সরবরাহ বন্ধ রেখে অতিরিক্ত ড্রিংকারে ঘন ঘন পানি দিতে হবে । গরম বেশি পরলে দুপুরে খাবার বন্ধ করার সময় ধীরে ধীরে বাড়ানো যাবে।
- প্রতিদিন ১-২ বার ভালভাবে লিটার নাড়িয়ে দিয়ে লিটার এর আদ্রতার পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে। এসময় খাবার ও পানির পাত্র যেন নোংরা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লিটার নাড়ানোর সময় ঘরের পর্দা কিছুটা নামিয়ে দিয়ে বাতাস চলাচল বৃদ্ধি করা উচিত যেন ধুলাবালির কারনে মুরগির শ্বাস কষ্ট না হয়।
- খামারে প্রবেশের পূর্বে হাত-পা সাবান দিয়ে ধুয়ে অতঃপর জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।
ব্রয়লার মুরগির ঘরের পরিচর্যা ও জীবাণুমুক্ত করণ পদ্ধতি (Bio-safety):
ঘরের লিটার পরিস্কার হতে হবে এবং উন্নত জীবাণুনাশক দিয়ে তা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ঘরের দেয়াল-মেঝে ভালমত পানি দিয়ে পরিস্কার করতে হবে। তবে কস্টিক সোডা দিয়ে পরিষ্কার করলে ভালো হয় ।
ফিউমিগেশন শুরু করার পূর্বে দরজা, জানালা, ভেন্টিলেটর প্রভৃতি বন্ধ করতে হবে যাতে ঘরে কোনো বাতাস না ঢুকে। ঘরের প্রতি ১০০ ঘন ফুট জায়গার জন্য ৬০ গ্রাম পটাসিয়াম পার-ম্যাঙ্গানেট (Potassium Per Manganate) ও ১২০ মি.লি. ফরমালিন (Formallin) (৪০%) দিয়ে ফিউমিগেট করতে হবে।
ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার জন্য প্রস্তুতিঃ
▶পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ব্রয়লার পালনের পূর্বশর্ত। তাই পূর্ববর্তী ব্যাচের লিটার সরিয়ে ব্রয়লারের ঘর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
▶পানি দিয়ে ধুয়ে (জীবাণুনাশক মিশিয়ে) ৭ থেকে ১০ দিন খালি রাখতে হবে। এরপর ঘরে লিটার (তুষ) বিছিয়ে দিতে হবে।
▶বাচ্চা আসার ৬ ঘণ্টা পূর্ব থেকেই ব্রুডার রিং তৈরি করে রাখতে হবে এবং ব্রুডারের বাল্ব জালিয়ে তাপমাত্রা ৩৩ ডিঃসেঃ থেকে ৩৫ ডিঃসেঃ এ আনতে হবে।
▶খুব শীতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পূর্ব থেকেই ব্রুডার ঘর গরম করা যেতে পারে। ব্রুডার রিং এর ভিতরে একদিনের বাচ্চার উপযোগী খাবার ও পানির পাত্র স্থাপন করতে হবে।
▶বাচ্চা আনার সাথে সাথে বাক্স খুঁজে ভ্যাকসিন/টিকা (প্রয়োজন হলে) দিয়ে বাচ্চা ব্রুডার রিং এর ভিতর রাখতে হবে।
▶প্রয়োজনে বাচ্চার জন্য গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি দেয়া যেতে পারে। একই বয়সের বাচ্চা খামারে এক সাথে আনতে এবং এক সাথে বিক্রি করতে পারলে রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হবে।
▶প্রথম ১-২ ঘণ্টা বাচ্চাদেরকে বিশ্রাম নেয়ার এবং পানি ও খাবার খাওয়ার জন্য সময় দিতে হবে।
▶এরপর ১-২ ঘণ্টা পর খাদ্য, পানি সরবরাহ ও তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে এবং প্রয়োজনে ঠিক করে দিতে হবে।
▶১৪ দিন পর গ্রীষ্মকালে আলাদা তাপের প্রয়োজন নেই, তবে শীলকালে ২০ ডিঃসেঃ এর নীচে তাপমাত্রা নামলেই তাপ দিতে হবে।
ব্রয়লার খামারির দৈনন্দিন কর্মসূচিঃ
(Vaccination +পানি+ খাবার+ তাপমাত্রা+ বাসস্থান সম্পর্কিত)
- ০-দিন: লিটার ও ব্রুডার রিং স্থাপন, পানি ও খাবার পাত্রের ব্যবস্থা করা এবং ব্রুডারের ভিতর ৩৩-৩৫ ডি. সে. তাপমাত্রা তৈরি করা।
- (১ দিন): রানীক্ষেত ও ব্রোংকাইটিস এর টিকা দেওয়া। মানসম্মত ভ্যাকসিনের মধ্যে ক্লোন ৩০ + এম এ ৫ ভ্যাকসিনটি উল্লেখযোগ্য। প্রতিটি ব্রুডার রিং-এ ২৫০-৫০০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়া যেতে পারে।
- ২-দিন থেকে ৪: প্রতিদিন খাবার ও পারির পাত্র পরিষ্কার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য ও পানি সরবরাহ করা এবং তাপমাত্রা সঠিক আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা।
- (৫-দিন): খাবার ও পানির ছোট পাত্র (প্লেট) সরিয়ে খাদ্য ও পানির বড় পাত্র সরবরাহ করা।
- ৬-দিন: খাবার ও পানি সরবরাহ করা ও তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা।
- (৭- দিন): গামবোরো ভ্যকসিন দেয়া, সেক্ষেত্রে ডি ৭৮ ভ্যাকসিনটি দেয়া যেতে পারে।
- ৮-দিন থেকে ২০: খাবার ও পানি সরবরাহ করা, প্রতি সপ্তাহে একবার শতকরা ৩ ভাগ ব্রয়লারের ওজন নেওয়া এবং বাচ্চা সরবরহকারী প্রতিষ্ঠানের চার্টের ওজনের সাথে মিলিয়ে দেখা। ওজন কম হলে খাদ্যে প্রোটিন বাড়িয়ে দিতে হবে। আর ওজন বেশি হলে আলো ১ ঘণ্টা কমিয়ে দিতে হবে।
- (২১-দিন): গামব্রোরো ভ্যাকসিন দেওয়া, সেক্ষেত্রে ডি ৭৮ ভ্যাকসিনটি দেওয়া যেতে পারে।
- ২২-দিন থেকে বিক্রির পূর্ব পর্যন্ত: নিয়মিত খাবার ও পানি সরবরাহ করা, প্রতি সপ্তাহে ওজন পরীক্ষা করা, লিটার বেশি আর্দ্র হলে এর উপর কাঠের গুড়া বা তুষ ছিটিয়ে দিতে হবে, প্রতিদিন ২৩ ঘণ্টা করে আলো সরবরাহ করা, সূর্য অস্তের পর কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করা (বৈদ্যুতিক বাল্ব), ব্রয়লার ঘরের তাপমাত্রা ১৮-২২ডি.সে. এর মধ্যে রাখা, গ্রীষ্মকালে বৈদ্যুতিক ফ্যান ব্যবহার করা।
ব্রয়লার পালনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
স্থান:
ফ্লোরে পালন করলে প্রতি বর্গমিটারে (১বর্গ মিটার=১০.৭৬ বর্গফুট) ১০ থেকে ১২টি ব্রয়লার এবং মাঁচা তৈরি করে পালন করলে প্রতি বর্গমিটারে ১৫টি ব্রয়লার পালন করা যাবে।
খাবার পাত্র:
লম্বা খাবার পাত্র প্রতি ৫ সেন্টিমিটারের জন্য ১টি ব্রয়লার এবং গোল খাবার পাত্রপ্রতি ২ সেন্টিমিটারের জন্য ১টি ব্রয়লার হিসেবে সরবরাহ করতে হবে। তবে ব্রুডিং এর সময় প্রতি ৮০-৯০টি বাচ্চার জন্য ১টি খাবার প্লেট সরবরাহ করতে হবে।
পানির পাত্র:
লম্বা পানির পাত্র প্রতি ২ সেন্টিমিটারের জন্য ১টি ব্রয়লার এবং গোল পানির পাত্র প্রতি ১ সেন্টিমিটারের জন্য ১টি ব্রয়লার হিসেবে সরবরাহ করতে হবে। তবে ব্রুডিং এর সময় প্রতি ১০০টি বাচ্চার জন্য ১টি পানির প্লেট সরবরাহ করতে হবে।
ব্রুডিং (Brooding): প্রতিটি ব্রুডারে ২৫০-৫০০টি পর্যন্ত বাচ্চা ব্রুডিং করা যাবে।
ব্রুডিং এর জায়গার পরিমাপ: ১ম সপ্তাহ প্রতি বর্গমিটারে (১বর্গ মিটার=১০.৭৬ বর্গফুট) ৬০-৬৫টি বাচ্চা ব্রডিং করা যাবে এবং ২য় সপ্তাহে প্রতি বর্গমিটারে ৩০-৩৫টি বাচ্চা ব্রুডিং করা যাবে। অর্থাৎ ৩০ ফুট বা ৯.১ মিটার লম্বা লম্বা চিকগার্ডের সাহায্যে ৫০০টি বাচ্চা ব্রডিং করা যাবে। আর চিকগার্ডের পরিধি প্রতিদিনই সামান্য পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
চিক গার্ডের উচ্চতা: উচ্চতা ৪৫-৫০ সেন্টিমিটার বা ১৮-২০ ইঞ্চি।
ব্রুডারের (Brooder) ভিতরে তাপমাত্রা (চিক লেভেলে):
বয়স (দিন) তাপমাত্রা ( ডিঃসেঃ)
০-৩ ২২
৩-৭ ৩০-৩১
৭-১৪ ২৬-২৮
ব্রয়লার মুরগি প্রক্রিয়াজাতকরণের পূর্বে করণীয়ঃ
১) ব্রয়লার ঠান্ডা সময়ে ধরা উচিত।ব্রয়লার ধরার অন্তত: ২ থেকে ৩ ঘন্টা পূর্বে খাদ্য বন্ধ করতে হয়।
২) দিনে ঘর অন্ধকার করে নেওয়া অথবা রাত্রিবেলায় ডিমলাইট জ্বালিয়ে ব্রয়লার ধরা ভাল। ধরার পূর্বে ঘরের সরঞ্জামাদি সরিয়ে ফেলা উচিৎ এবং ক্যাচিং হুক বা হার্ডল ব্যবহার করলে ভালো হয়।ব্রয়লার ধরার সময় ঝাপাঝাপি করা ঠিক নয়।
৩) পরিবহনকালে খাচায় অধিক গাদাগাদি পরিহার করতে হয়।
৪) ধরার পর ৪ থেকে ৫ ঘন্টা পর্যন্ত অভূক্ত রাখা যায়।অভূক্ত রাখার ফলে কিছুটা ওজন কমলেও প্রক্রিয়াজাত করা সহজ হয়।
৫) ব্রয়লার চিলিং বা ঠান্ডা করার পর শতকরা ২ থেকে ৩ ভাগ ওজন বৃদ্ধি পায়।
Naeem
October 12, 2020 at 9:16 amআচ্ছা ভাই
এখন আমি বাচ্চার বয়স যখন ১৬ দিন ওভার হইল
তখন আমি বাচ্চা গুলো কে মাচায় ছেড়ে দিলাম আর লিটার গুলো বাহিরে ফেলে দিলাম
এখন আমার কি প্রতিদিন কি বাচ্চার পায়খানা গুলো কি পরিষ্কার করতে হবে নাকি
যখন মুরগি বিক্রি করার শেষ সময় গিয়ে একবারে পরিষ্কার করতে হবে নাকি?
জানাবেন প্লিজ ভাই