ধান চাষের জন্য প্রতিবছর তিন লাখ মেট্রিক টন ধানবীজ প্রয়োজন হয় আমাদের দেশে। এর মধ্যে প্রায় আট হাজার মেট্রিক টন হাইব্রিড ধানবীজ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। দেশীয় বীজ ব্যবহার করা হয় বাকি চাহিদা পূরণের জন্য। ধান কাটার পরে বীজ সংরক্ষণ করা হয়। চাষি পর্যায়ে ধানের বীজ সংরক্ষণে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। বীজ সংরক্ষণে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করলে বীজের গুণাগুণ কমে যাবে। কমে যাবে জীবনীশক্তি ও অংকুরোদগম ক্ষমতা।
বীজ সংরক্ষণ কৌশল বলতে বীজকে পূর্ণ ক্ষমতা সম্পন্ন অবস্থায় পরবর্তী মৌসুম পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখার জন্য গৃহীত কৌশল।
আদ্রর্তা ও তাপমাত্রা হল সংরক্ষিত বীজের বড় শত্রু।
অন্যদিকে পদ্ধতি সঠিক না হলে বীজ একধরনের ছত্রাক ও পোকার আক্রমণ হয়।
এতে বীজের গজানো ক্ষমতা কমে যায় ও বীজ খেয়ে নষ্ট করে ফেলে।
স্বাভাবিকভাবে বীজ রাখা হয় মাটির পাত্র, বস্তা, পলিথিনসহ বস্তা, ডোল ইত্যাদিতে।
েএসব ক্ষেত্রে মাটির পাত্রে অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র থাকে।
অন্যদিকে বস্তা বা পলিথিন পোকা ও ইঁদুরে কেটে ফেলে।
আবার ধানের বীজের খোঁচাতে পলিথিন ছিদ্র হয়ে যায়।
এর ফলে বাতাস চলাচল করতে পারে।
যার দরুন পোকা ও ছত্রাকের আক্রমণে বীজ নষ্ট হয়ে যায়।
বীজ সংরক্ষণে কেমন পাত্র ব্যবহার করতে হবে
প্লাসস্টিকের ড্রাম, টিন বা অন্য কোনো ধাতব পাত্র বীজ রাখার জন্য উৎকৃষ্ট।
অথবা রঙ করা মটকাতেও বীজ ভালো থাকে।
পাত্রের মুখটি অবশ্যই বায়ুরোধী হতে হবে।
ধান বীজ সংরক্ষণের জন্য আবশ্যক বিষয়
প্রথমে বীজের পাত্র ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
এরপর তা ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
এরপর সেই পাত্রটি পূর্ণ করে বীজ রাখতে হবে।
মাটি থেকে উপরে যেকোনো মাচার উপর পাত্রটি রাখতে হবে।
বীজ ঠিক মত শুকিয়ে নিতে হবে।
যেন বীজ এর আদ্রর্তা ১২-১৩ পারসেন্ট এর নিচে থাকে।
তবে বীজ পাত্রে রাখার আগে খুব ভালো মত ঠান্ডা করে নিতে হবে।
পাত্রের মুখটি ভালোভাবে বন্ধ করে দিতে হবে যেন বাতাস কোন ভাবেই না ঢুকতে পারে।
এই পাত্রটি খোলার বা বীজ রোদ দেয়ার প্রয়োজন নেই।
শুকনো ছাই দিয়ে বীজের উপর খালি জায়গা পূর্ণ করে দিতে হবে।
ধান যাতে পোকায় আক্রমণ না করে সেজন্য নিমপাতা, তামাক পাতা বা বিষকাটালী ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।