Monday, 25 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

নকল বীজে বাজার সয়লাব, প্রতারিত কৃষক


ফসলে বীজ

নকল বীজের ছড়াছড়ি, প্রতারিত কৃষক

করোনা কালীন যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সকল জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার, তখন একদল লোক কিছু কথিত মুনাফার জন্য প্রতারণা করছেন বাজারে নকল বীজের মাধ্যমে। বর্তমান সঙ্কটে যেখানে কৃষি মোকাবেলা করতে পারে সকল কিছুর সেখানে এই ‍মুষ্টিমেয় লোক নষ্ট করে দিচ্ছে সকল ধরনের চেষ্টা।

সামনে রোপা আমন মওসুম। এই মওসুম কে সামনে রেখে এই সকল মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা নতুন পন্থায় প্রতারণা করছে। ভারতীয় ধানের জাত স্বর্ণা যা ভারতীয় কৃষকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় তার নামের মোড়কে বিক্রয় করছে স্থানীয় নিম্নমানের বীজ। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে বাংলাদেশে স্বর্ণা নামের কোন ধান নেই। কিন্তু এই একই প্যাকেটের আদলে প্যাকেট তৈরি করে তাতে নিম্নমানের বীজ ব্যবহার করে বাজারে বিক্রয় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

ঠাকুরগা্ঁয়ের বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে দেখা যায় যে, বিভিন্ন নামকরা কোম্পানির নামে বীজ বিক্রয় হচ্ছে। অথচ তা ঐ কোম্পানির নয়। না জেনে কেনার ফলে কৃষক এসব বীজ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। যে ফলন হবার কথা তা পাচ্ছেন না। এতে ধানের ফলনে ধ্বস নামার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

ফসলে বীজ
ফসলে বীজ

মানসম্মত বীজ না পেয়ে দিশেহারা কৃষকেরা অভিযোগ করেন যে সরকারি কৃষি বিভাগ সকল কিছু জানার পরও চুপ করে আছে। তাদের অভিযোগ কৃষি বিভাগ যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে প্রতারিত হবার কোন অবকাশ থাকবে না।

প্রতারণার অভিযোগে গত শনিবার শতাধিক কৃষক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের পাটিয়াডাঙ্গী বাজারের “কৃষক বন্ধু ট্রেডার্স” নামে একটি দোকান ঘেরাও করে রাখে। তাদের অভিযোগ লাল স্বর্না বীজের প্যাকেটে সাদা স্বর্ণা বীজ দিয়ে তাদের প্রতারিত করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় টাইগার ব্রান্ড এর স্বর্ণা ও ভারত সীড নামের প্যাকেটে কোন উৎপাদনের তারিখ বা মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ নেই উপরন্ত প্যাকেটের ভিতরে মৃত ধান, মাটি ও খড় পাওয়া যায়। এ অবস্থায় দোকান মালিক দোকান বন্ধ করে সরে পড়লে একই দিন সন্ধ্যায় ইউপি মেম্বার ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে বীজ বদল করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তা পালন করেনি দোকান মালিক। এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকেরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ভেজাল বীজের কারণে প্রতারিত হবার কারণে সরকার প্রদত্ত প্রণোদনার সফলতা পাচ্ছেন না তারা। তাদের দাবী ভাল বীজ দাম বেশি হলেও তারা ভাল ফলনের এবং ভাল আয়ের আশা করতে পারেন। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে তাদের পুজির সর্বস্ব হারানোর আশংকা করছেন। অপরদিকে দোকান মালিক এর দাবী বীজ তিনি ক্রয় করে এনেছেন তাই দায়ভার বিক্রয় কোম্পানির।

সূত্র জানায়   যেকোন ধরনের বীজ বিক্রয় করতে হলে জেলা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রত্যয়ন লাগে, যা তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রদান করা হয়। জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার এই ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানান।

সদর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, এই মওসুমে রোপা-আমন উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ ইতোমধ্যেই করা হয়েছে। প্রায় আড়াইশ হেক্টর জমিতে বীজতলা করে বীজ বপন ও করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ব্যবসায়ীই জানান যে বিএডিসি সহ নামকরা অনেক কোম্পানির বীজ পাওয়া গেলেও কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যবসায়ীরা জানান যে ভাল কোম্পানির নামের মোড়কে ভেজাল বীজ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাদের দাবী তারা কেবল কোম্পানি থেকে ক্রয় করে নিয়ে আসেন, মোড়কের ভিতরে ভাল কি খারাপ সে তারা জানতে পারেন না। এতে তারাও প্রতারিত হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার অভিযোগের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

0 comments on “নকল বীজে বাজার সয়লাব, প্রতারিত কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *