দেশে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ যথেষ্ট। এমনকি তেল বা সারেরও কোন অভাব নেই। এমনটাই বলছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, বাংলাদেশে নানা রকম অপপ্রচার চলছে এখনকার সময়ে।
দেশে বিভিন্ন জিনিসের হাহাকার চলছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী।
তবে প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে দেশে কোনো হাহাকার নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বৈদেশিক মুদ্রা বা তেলের কোনরূপ হাহাকার নেই বলে জানান তিনি।
এমনকি সারেরও পর্যাপ্ত মজুদের কথাও বলেন তিনি।
তিনি দাবি করেন আগামী বোরো পর্যন্ত সারের কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সেইরকমভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
‘বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে তৈল ফসলের অন্তর্ভুক্তি এবং ধান ফসলের অধিক ফলনশীল জাতসমূহের উৎপাদন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করার সময় কৃষিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে অনেক টাকা ব্যয় করছে বলে দাবি করেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, প্রতি বছর ভোজ্যতেল আমদানিতে আড়াই বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয় ।
যা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হবে।
সেই সাথে ছয়-সাত লাখ টন ডাল প্রতি বছরই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
একসময় এসব ফসলে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন এগুলো আবার বাংলাদেশে উৎপাদন করতে হবে।
এ লক্ষ্যে বেশ কিছু শর্ষের জাত নিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা।
১১০-১১৫ দিনের মধ্যেই এসব জাতের ফসল তোলা যায়।
তবে এতে বোরোর উৎপাদনে কোন প্রভাব পড়বে না।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে অস্থিতিশীল।
এমন পরিস্থিতিতে এই ব্যয় আরও বেড়ে গেছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
তাই দেশেই ভোজ্যতেল এর উৎপাদন যেন বাড়ানো হয় সেই পরামর্শ দেন তিনি।
দেশে চাহিদার ১০ ভাগ তেল উৎপাদিত হয় বলে জানান মন্ত্রী।
সেই উৎপাদন আরও বাড়িয়ে ৪০ ভাগে আনতে হবে।
ধানের উৎপাদনের পর পর ভোজ্যতেল উৎপাদন করা যায়।
এটা থেকে কৃষকের অতিরিক্ত আয়ও আসবে।
সম্ভাব্য সকল স্থানেই শর্ষের আবাদ করে নিতে হবে।
কৃষিকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও আধুনিক করতে হবে।
এমন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
ধানের পাশাপাশি শর্ষের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী জানান, দেশে ধানের উৎপাদন এখন বেড়েছে।
দেশের ৭৪ ভাগ জমিতে ধানের চাষ হয়ে থাকে।
মূলত আমাদের কৃষি ধানভিত্তিক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে অন্যান্য শস্য ধানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে বলেও তিনি মনে করেন।
অন্যান্য ফসলের মতো শর্ষের উৎপাদনও বাড়াতে হবে বলে জানান তিনি।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ কর্মশালা পরিচালিত হয়।
এতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিবিষয়ক পাঁচটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীর এতে স্বাগত বক্তব্য দেন।