নওগাঁর পোরশা একটি উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চল । বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী এই উপজেলার। অনেকেই আম চাষে জড়িয়েছেন জমিতে ধান ও সবজির পাশাপাশি। আবদুর রহিম অবশ্য তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম। তিনি আম চাষের বদলে চাষ করেছেন ড্রাগন ফলের। তার ড্রাগন চাষ পথ দেখাচ্ছে অন্যদের। ড্রাগন ফল চাষে সফল আবদুর রহিম যেন অন্যদের জন্য দিক নির্দেশক।
আবদুর রহিমের ড্রাগন ফল চাষ
উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের পোরশা গ্রামে আবদুর রহিমের বাড়ি । পেশায় তিনি পোরশা বড় মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার পাশাপাশি কৃষিকাজ করেন। নিজের ২৪ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন তিনি।
আবদুর রহিমের বাগানে ঘুরে চারদিকে সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে। পাঁচ ফুট উচ্চতার প্রতিটি কংক্রিটের খুঁটি পেঁচিয়ে ড্রাগন ফলের গাছগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। বাগানে কর্মরত ২০-২৫ জন শ্রমিকের মধ্যেকেউ গাছ থেকে পাকা ফল সংগ্রহ করছিলেন তো অন্যরা নিড়ানি দিয়ে আগাছা তুলছিলেন।
২০১৮ সালের আগস্টের দিকে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন আবদুর রহিম। এর পাঁচ-ছয় মাস আরও ১৬ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চারা রোপন করেন। ২৪ বিঘা জমির ওপর ৪০ হাজারের বেশি ড্রাগনগাছ আছে। চারা লাগানোর পর গত বছরই প্রথম গাছে ফল আসে।
বিগত বছর ফল বিক্রি হয়েছে প্রায় আট লাখ টাকার। গত বছরের তুলনায় এবার গাছগুলোতে ফল ধরছে ভালো।যদিও এ বছর মৌসুমের শুরুতে ড্রাগনের দাম কিছুটা কম ছিল। কিন্তু বাজারে এখন অন্যান্য ফল কম থাকায় এখন ড্রাগনের চাহিদা বেড়েছে। এখন বাগান থেকে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি হয়েছে।
স্কুলশিক্ষক শহিদুল ইসলাম কাটপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিমের দেখাদেখি ড্রাগন চাষ করছেন।
পোরশা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল হাই জানান, বরেন্দ্র ভূমি উঁচু হবার কারণে কিছু এলাকা ড্রাগন ফলের জন্য খুবই উপযোগী। তাছাড়া এ অঞ্চলের ফলের আকার বড় ও সুমিষ্ট।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন চাষ করা যায়। উঁচু জমিতে এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। গর্ত করে তিন মিটার পরপর চারা রোপণ করতে হয়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারা রোপণের ভালো ও উপযুক্ত সময়। একটি পরিপক্ব গাছে সর্বোচ্চ ৪০টি ফল পাওয়া যায়।এছাড়াও ছাদবাগানে বা টবে ড্রাগন ফল চাষ করা যায়।