Friday, 09 May, 2025

সর্বাধিক পঠিত

টবে স্কোয়াশ (Squash) চাষ পদ্ধতি


স্কোয়াশ একটি জনপ্রিয় সবজি, যা তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ে ফলন দেয়। টবে বা কনটেইনারে সহজেই স্কোয়াশ চাষ করা যায়। স্কোয়াশ (Squash) একটি জনপ্রিয় সবজি, যা Cucurbitaceae পরিবারভুক্ত উদ্ভিদ। এটি মূলত শসা, কুমড়া ও লাউয়ের জাতভুক্ত একটি ফলজাতীয় সবজি। স্কোয়াশের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে, এবং এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালীন (Summer Squash) ও শীতকালীন (Winter Squash) – এই দুইভাবে বিভক্ত করা হয়।

নিচে ধাপে ধাপে স্কোয়াশ চাষের পদ্ধতি দেওয়া হলো—

১. উপযুক্ত টব নির্বাচন

আরো পড়ুন
মৎস্য খামার ব্যবস্থাপনায় আসছে ‘স্মার্ট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’ (IOT) , মোবাইল অ্যাপে হবে খামার মনিটরিং

বাংলাদেশে মাছ চাষ ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। খুব শিগগিরই মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে দূরবর্তী মৎস্য খামার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ Read more

দেশজুড়ে শুরু হলো মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ মাটি পরীক্ষা কার্যক্রম

বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ভ্রাম্যমাণ মাটি পরীক্ষা কার্যক্রম, যা চলবে আগামী ৫ জুন ২০২৫ পর্যন্ত। কৃষকের হাতে পৌঁছে Read more

  • স্কোয়াশ গাছের শিকড় বেশ গভীর হয়, তাই ১০-১৫ ইঞ্চি গভীর এবং প্রশস্ত টব বা ব্যাগ নির্বাচন করুন।
  • সিরামিক, প্লাস্টিক বা মাটির টব ব্যবহার করতে পারেন।
  • টবে ড্রেনেজ সিস্টেম ভালো থাকতে হবে, যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে।

২. মাটি তৈরি

  • স্কোয়াশ চাষের জন্য দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি সবচেয়ে ভালো।
  • মাটির মিশ্রণ:
    • ৬০% উর্বর মাটি
    • ৩০% গোবর সার বা কম্পোস্ট
    • ১০% বালি বা পার্লাইট (ড্রেনেজ ভালো করার জন্য)
  • মাটির pH ৬.০-৭.৫ এর মধ্যে হলে ভালো ফলন হয়।

৩. বীজ নির্বাচন ও রোপণ

  • উন্নত জাতের স্কোয়াশ বীজ সংগ্রহ করুন।
  • প্রতি টবে ২-৩টি বীজ ১ ইঞ্চি গভীরে বপন করুন।
  • বীজ বপনের পর হালকা পানি দিতে হবে।
  • ৫-৭ দিনের মধ্যে চারা গজাবে।
  • চারা বড় হলে ১-২টি শক্তিশালী চারা রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলুন

৪. সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা

ক. সেচ প্রদান

  • স্কোয়াশ গাছ আর্দ্র মাটি পছন্দ করে, তবে পানি যেন জমে না থাকে।
  • প্রতি ২-৩ দিন পর পর পানি দিন, গরমের দিনে প্রতিদিন হালকা সেচ দিন।

খ. সার প্রয়োগ

  • প্রতি ১৫ দিন পর পর নিচের সার ব্যবহার করতে পারেন:
    • জৈব সার (কম্পোস্ট/গোবর সার) – ২ মুঠো
    • টিএসপি – ১০ গ্রাম
    • পটাশ – ৫ গ্রাম
    • ইউরিয়া – ৫ গ্রাম
  • ফুল আসার সময় বোরন ও দস্তা (Zn, B) স্প্রে করলে ভালো ফলন হবে।

গ. লতা ও মাচা ব্যবস্থা

  • স্কোয়াশের লতা ছড়িয়ে পড়ে, তাই মাচা (বাঁশের খুঁটি, জালি বা দড়ির সহায়তা) তৈরি করুন।
  • এতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং ফল পচে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে।

ঘ. পোকা-মাকড় ও রোগবালাই দমন

  • পাউডারি মিলডিউ, ডাউনি মিলডিউ, ভাইরাস রোগ হতে পারে, তাই প্রতি ১০-১৫ দিন পর নিম তেল স্প্রে করুন
  • লাল মাকড়, ফল ছিদ্রকারী পোকা, এফিডস (সাদা মাছি) এর আক্রমণ হলে জৈব কীটনাশক বা সাবান পানি স্প্রে করুন

৫. ফুল আসা ও পরাগায়ন

  • স্কোয়াশে পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা হয়, তাই পরাগায়নের জন্য মৌমাছি বা পোকা প্রয়োজন।
  • পরাগায়ন ভালোভাবে না হলে পুরুষ ফুল থেকে স্ত্রী ফুলে তুলো বা ব্রাশ দিয়ে পরাগায়ন করতে পারেন

৬. ফল সংগ্রহ

  • বীজ বপনের ৫০-৬০ দিনের মধ্যে স্কোয়াশ সংগ্রহযোগ্য হয়
  • ফল বেশি পাকা হয়ে গেলে খাওয়ার উপযোগী থাকে না, তাই ১৫-২০ সেমি লম্বা হলে তুলে ফেলুন
  • প্রতি গাছে ১০-১২টি স্কোয়াশ পাওয়া যেতে পারে।

উপসংহার

টবে স্কোয়াশ চাষ খুব সহজ এবং সঠিক পরিচর্যা করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বাসার ছাদ, ব্যালকনি বা বারান্দায় স্কোয়াশ চাষ করে আপনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং রাসায়নিকমুক্ত সবজি পেতে পারেন।

0 comments on “টবে স্কোয়াশ (Squash) চাষ পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ