চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম অনেক আগেই জি-আই সনদ পেয়েছে। কিন্তু এবার জি-আই সনদ পেতে যাচ্ছে ফজলি আম এবং বাগদা চিংড়ি। রসালো, আঁশবিহিন, আকারে বিশাল ফজলি আম। অন্যদিকে কালো ডোরা কাটা বাগদা চিংড়ি। খুব শীঘ্রই জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর সনদ বা জি-আই সনদ পেতে যাচ্ছে ঐ আম এবং ডোরা কাটা বাগদা চিংড়ি।
সরকারের পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগের রেজিস্টার মোঃ আবদুস সাত্তার।
তিনি জানিয়েছেন, জিআই পণ্য হিসেবে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ির স্বীকৃতি দিতে গেজেট প্রকাশ করা হয়ে গেছে।
সনদ দেবার কাজ শেষ হয়ে যাবে আর দিন পনেরোর মধ্যে।
তিনি জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী স্বীকৃতির জন্য আবেদন এসেছে।
এর পরে এই দুটি কৃষি পণ্যের ভৌগলিক নির্দেশক।
এই সাথে দুটি জার্নাল প্রকাশ করা হয়েছে।
এখনো কেউ আপত্তি করেনি এই পণ্যের নির্দেশক নিয়ে।
তিনি আরও জানান জার্নাল প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে এটি নিজেদের বলে কেউ আপত্তি না করলে সনদ দেয়া হবে।
ফল উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র ফজলি আমের জিআই সনদের আবেদন করেছিল।
আর মৎস্য অধিদপ্তর বাগদা চিংড়ির জন্য আবেদন করে।
কী কারণে বাংলাদেশের দুটি পণ্য স্বীকৃতি
পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ফজলি উৎপাদন করা হয়।
আর এশিয়ার বেশ কিছু দেশে হয় লবণাক্ত পানির বাগদা চিংড়ি।
এই কৃষি পণ্য দুটি কেন বাংলাদেশের জিআই সনদ কেন পাবে সেটি ব্যাখ্যা করেন মোঃ আবদুস সাত্তার।
তিনি বলেছেন, এই সনদ সেটির ক্ষেত্রে দেয়া হয় যে পণ্য একটি অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ।
যেমন এশিয়ার বেশ কিছু দেশে পাওয়া যায় ‘ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প’ বা বাগদা চিংড়ি।
কিন্তু আমাদের দেশে যেটা হয় সেটার বৈশিষ্ট্য আলাদা।
সেটার স্বাদ ও ঘ্রাণ অন্য কোথাও চাষ হলে মিলবে না।
জিআই সনদ পেলে কি লাভ
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট নয়টি পণ্য জিআই সনদ পেয়েছে।
এর মধ্যে ইলিশ মাছ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম, জামদানি, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরা এবং নেত্রকোনার বিজয়পুরের সাদা মাটি।
বাগদা চিংড়ি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী প্রাণী, যা ৮০’র দশক থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে।
এটি বিদেশে রপ্তানি হলেও কাছাকাছি সময়ে এর রপ্তানি কিছুটা পড়ে গেছে।
মি. সাত্তার জানান যে, বিদেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে জিআই সনদ পাওয়ার পর।
জিআই ট্যাগ অনেকটা ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করে।
অনেকে বাগদা চিংড়ি রপ্তানি করছে বাংলাদেশ থেকে।
জিআই সনদ না থাকলে ক্রেতারা এটিকে ব্র্যান্ডেড বলে মনে করে না, দাম কমে যায়।