আবহাওয়া ও মাটি বেশি রুক্ষ হওয়ায় নওগাঁ জেলা ঠা ঠা বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত। এ জেলায় বৃষ্টিনির্ভর আমন ধান ছাড়া একসময় তেমন কোনো ফসল হতো না। এখানকার কৃষিজমি বছরে প্রায় সাত থেকে আট মাস অনাবাদি পড়ে থাকত। তবে সেই চিত্র কৃষির আধুনিকায়নের ফলে বদলে গেছে। এখন কৃষি ফসলে সমৃদ্ধ নওগাঁ জেলা।
এখন জেলার অধিকাংশ জমিই তিন ফসলে পরিণত হয়েছে।
তবে এখানকার কৃষক ধান ও আম চাষে বেশি আগ্রহী।
আর জেলার অর্থনীতির চাকা এই দুই ফসলে এখন ঘুরছে।
পাশাপাশি দিন দিন বাড়ছে মাছ চাষেরও পরিধি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁ কার্যালয় থেকে জানা যায়, ৩ হাজার ৪৩৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ জেলা।
জেলায় কৃষক পরিবার ৫ লাখ ১৯ হাজার ২৫২টি, ভূমিহীন কৃষক পরিবার ২৮ হাজার ৭৩৫টি।
বর্তমানে জেলায় ফসলি জমি ২ লাখ ৬৫ লাখ ৮৭৩ হেক্টর।
আমসহ অন্যান্য ফলদ বাগান রয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমিতে।
বাকি জমিতে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান যে, পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলার কিছু কিছু উঁচু অঞ্চলে চাষ হয় না।
এ ছাড়া জেলার ৮০ শতাংশ জমিই সমতল।
জেলার মাটির গুণাগুণ এবং আবহাওয়া ভালো।
তাই সবধরণের ফসল ভালো হয় এ জেলায়।
চলতি বছর নওগাঁয় আম চাষ হয়েছে ২৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে ২০১৫ সালে জেলায় আম চাষের জমির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯২৬ হেক্টর।
২০১০ সালে এই চাষের হার ছিল ৬ হাজার ২৬৮ হেক্টর।
যার মানে দাড়ায় গত এক দশকে নওগাঁয় ১৯ হাজার ৫৮২ হেক্টর জমিতে আম চাষের পরিধি বেড়েছে।
জেলায় আম বাগানের সংখ্যা বর্তমানে ১০ হাজার ৫৮৬টি।
তাছাড়া আম চাষির সংখ্যা ৭ হাজার ৭৪৮ জন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নওগাঁ কার্যালয়ের উপপরিচালক শামসুল ওয়াদুদ।
তিনি বলেন, ধানের তুলনায় আম, পেয়ারাসহ অন্যান্য ফলদ বাগানে খরচ ও শ্রম দুটোই কম লাগে।
তুলনামূলক ভাবে তাই ধানের চেয়ে ফল চাষ অনেক বেশি লাভজনক।
বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব আম চাষ করে।
ধান চাষে ব্যবহৃত পানির চার ভাগের এক ভাগই ফল চাষে প্রয়োজন হয় না।
তাছাড়া বড় বড় ফলদ গাছ কোন এলাকায় প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে।