Monday, 25 November, 2024

সর্বাধিক পঠিত

কৃষি গবেষণায় পদক পেল পরমাণু গবেষনা ইনস্টিটিউট-বিনা, মিলল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি


যে কোন স্বীকৃতিই সম্মানজনক। আর সেটা যদি হয় দেশের জন্য তাহলে তো তার সাথে মিশে থাকে আবেগ। আর স্বীকৃতি যদি হয় আন্তর্জাতিক, তাহলে তো তা দেশের মাথা উচু করেই তোলে। সেই ভাবেই দেশের মাথা উচু করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)। আর এই স্বীকৃতি এসেছে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে নানা উদ্ভাবনের জন্য।  প্রতি্ষ্ঠানের সাথে সাথে পুরষ্কার পেয়েছেন ময়মনসিংহে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামছুন্নাহার বেগম । এই পুরস্কার প্রদান করছে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) সম্মেলনকক্ষে  এই তথ্য জানানো হয়। জানা যায় প্রতি দুই বছর অন্তর খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সারা বিশ্বের কৃষিক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য পুরস্কার দিয়ে থাকে । বিনা-র প্রাপ্ত পুরস্কার এর নাম ‘অসামান্য অর্জন পদক’।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এর  বিজ্ঞানীরা পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের উচ্চফলনশীল ও উন্নত জাত উদ্ভাবন করে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা প্রজননের বিভিন্ন উন্নত কলাকৌশল প্রয়োগ করার পাশাপাশি  ‘মিউটেশনাল ব্রিডিং’ ও ‘কনভেনশনাল ব্রিডিং’ প্রয়োগ করে থাকেন । এই বিজ্ঞানীরা কঠোরভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নিত্যনতুন কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য । সে সকল কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিনা এই পদকে ভূষিত হয়েছে। অন্যদিকে বিনার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শামছুন্নাহার বেগম পেয়েছেন ‘উইমেন ইন প্ল্যান্ট মিউটেশন ব্রিডিং অ্যাওয়ার্ড’।

আরো পড়ুন
পান চাষ পদ্ধতি

পান চাষ একটি লাভজনক কৃষি পদ্ধতি, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশে এটি ব্যাপক চাষ করা হয়। Read more

মিঠা জাতের পান চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ফুলের ঘাট এলাকার পান চাষের এই চিত্র সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। পান চাষ একটি লাভজনক ফসল হওয়ায় এটি ক্রমশ Read more

পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শামছুন্নাহার বেগম জানান যে, ২০৩০ সালকে সামনে রেখে  জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। সেই অনুযায়ী, দ্বিগুণ ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে বিনা-র কৃষিবিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন। ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গঠনে তাঁদের গবেষণা কার্যক্রম কাজে লাগিয়ে অনন্য ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি মতামত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)এর কার্যালয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে । এই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে ।  এখন পর্যন্ত ১৮টি ফসল এর প্রায় ৮৩টি মিউট্যান্ট জাত উদ্ভাবিত করেন তারা।  ফসলের প্রায় ১১৭টির অধিক গুণগত মানের ও উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন বিনা-র গবেষকরা। কেবল ধানের জাতই নয়, ধান ছাড়াও শর্ষে, মুগ ডাল, চিনাবাদাম, মসুর ডাল,  টমেটো, কাঁচামরিচ, তিল,  ছোলা এবং বারোমাসি লেবু।

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)এর মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম জানান যে,  এধরণের আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় তাঁরা খুবই আনন্দিত। আগামি সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার হস্তান্তর করা হবে আইএইএ-এর ৬৫তম সাধারণ অধিবেশনে ।

0 comments on “কৃষি গবেষণায় পদক পেল পরমাণু গবেষনা ইনস্টিটিউট-বিনা, মিলল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *