একদিকে যখন মাগুরার লোকজন কাঁঠাল এর বাম্পার ফলনেও হতাশ, তখন দেশের অন্যদিকে জমে উঠেছে কাঠালের বাজার। ঝিনাইদহের শৈলকূপা দেশের অন্যতম কাঁঠাল উৎপাদনকারী অঞ্চল। আর সেখানেই জমে উঠেছে কাঠালের রমরমা বাজার। শুধু এখানেই নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাঁঠাল পাঠানো হয় এ বাজার থেকেই । আর কাঁঠালের বেচা-কেনার জন্য আগের দিনেই তাই ভিড় জমায় বিভিন্ন রকম ব্যবসায়ী, যাদের মধ্যে থাকে পাইকার, বেপারি,আড়তদার, খুচরা বিক্রেতা সকলেই।
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ভাল নেই ব্যবসার হাল। ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে না কাঁঠালের যদিও গৃহস্থ ও কাঁঠাল চাষিরা ভাল দাম পাচ্ছেন বলে দাবী করেন।
শৈলকূপা উপজেলা সদরের হাট জেলার সবচেয়ে বড় হাট। একজন ব্যবসায়ী জানান যে ১৫টি কাঁঠাল গাছে এবার ভাল ফলন পেয়েছেন তিনি, যা প্রতি ১০০টি ৫ হাজার টাকায় বিক্রয় করেছেন। অপর এক ব্যবসায়ী জানান যে এ বছর প্রতি শতে দুই হাজার থেকে ১৪ হাজার পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে। এর দাম উঠানামা করে সাইজ এর উপর। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার হিসেব অনুযায়ী এবার এ অঞ্চলে ৩৫০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান যে, ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৭০ হাজার টন কাঠাল এবার পাওয়া যাবে এখান থেকে।
বাজার জমজমাট হলেও পাইকার ও বেপারিরা বলছেন দাম অনেক কম। তাদের মতে গত বছরের তুলনায় এবার দাম ২৫-৩০ ভাগ কম। তারা আরও জানান সপ্তাহে কম করে হলেও ৪০ লাখ টাকার কাঁঠাল্ ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। শৈলকূপা সদর বাজারে ঘুরে দেখা যায় প্রচুর ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা। ট্রাকে করে কাঁঠাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছেও বিভিন্ন জায়গায়।
জাতীয় ফল কাঁঠাল বাংলাদেশে জনপ্রিয় ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমন একটি ফল যার কোন কিছুই বাদ যায় না, সে হোক এর বাকল কিংবা বিচি। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলে সোডিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, নায়াসিন রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। কাচা পাকা যেকোন ভাবেই খাওয়া যায় এই ফল। তবে অতীব দু:খের বিষয় হলো উৎপাদন প্রচুর থাকা স্বত্ত্বেও এর সংরক্ষণ ব্যবস্থা নেই।
এ নিয়ে আফসোস করেন চাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সকলেই। অনেকে মনে করেন নামে জাতীয় ফল হলেও এর সংরক্ষণের দিক থেকে এটিকে ততটা গুরুত্ব দেয়া হয়না। চাষীদের দাবী, যদি সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করা যায় তবে মানুষ সারাবছর হয়তো কাঁঠাল পেতে পারতো। তাই তারা সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন যেন জাতীয় ফলের সঠিক ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সংরক্ষন হয়।