গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও আঁশসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি। এ সবজিতে আছে বিটা ক্যারোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা গাজর, সালাদ, জুস বা তরকারিতেও খাওয়া যায়। চোখ, ত্বক, চুল ও শরীরের নানা অঙ্গের জন্য গাজরের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না।
গাজরের উপকারিতা
১. গাজরে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরে কোলাজেন তৈরি হওয়া বৃদ্ধি করে। ফলে শরীরে কোথাও ক্ষত হলে তা দ্রুত ভালো হয়। এ ছাড়া গাজর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২. গাজর আঁশে পরিপূর্ণ। গবেষণা অনুযায়ী, ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা বেশি পরিমাণে ফাইবার খেলে গ্লুকজ মেটাবলিজম উন্নতি লাভ করে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের গাজর খাওয়া আবশ্যক।
৩. গর্ভাবস্থায়ও খেতে পারেন গাজর। গর্ভাবস্থায় গাজরের রস পান খুবই উপকারী। এতে শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হয় না। যেসব মা শিশুকে দুধপান করান, তাদের নিয়মিত গাজরের রস পান করা উচিত।
৪. গাজর হজম ক্ষমতা বাড়ায়। গাজর খেলে দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, বদহজম ইত্যাদি নিরাময় হয়। লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীর গাজরের রস, গাজরের স্যুপ পান করলে উপকার হয়।
৫. গাজরের উপকারী উপাদানগুলো ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অংশ নেয়। এ ছাড়া শ্বাসনালির প্রদাহ ভালো করে।
৬. গাজর দাঁতের সুরক্ষা দেয়। দাঁত পরিষ্কারক হিসেবে যেমন কাজ করে, তেমনি দাঁতের গোড়ায় ক্যালকুলাস বা পাথর জমতেও বাধা দেয়।
৭. গাজরে ক্যারোটিনয়েড রঞ্জক পদার্থ রয়েছে। এ উপাদানটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
গাজরের অপকারিতা
- প্রচুর পরিমাণে গাজর গ্রহণের ফলে ত্বকের রং হলুদ হয়ে যায় এবং অল্প বয়সের শিশুদের দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।
- গরমে বেশি গাজর খাওয়া এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। অনিদ্রা হলে কিভাবে দূর করবেন জেনে নিন।
- অন্ত্রে অতিরিক্ত বিটা ক্যারোটিনের উপস্থিতি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
- বেশি পরিমাণে গাজর খেলে আপনার গ্যাস, ডায়রিয়া, পেট, পাকস্থলির পাচনজনিত ব্যাধি দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত গাজরের রস খাওয়ার ফলে মহিলাদের বুকের দুধের স্বাদ পরিবর্তিত হয়।
- গাজরের উপকারিতা যেমন অনেক তেমনি এটি বছরের সবসময়ই পাওয়া যায়। এটি যথাসম্ভব কাঁচা খাওয়ার চেষ্টা করুন, এতে পরিপূর্ণ ভিটামিন এবং মিনারেলস্ পাবেন।
রেফ্রিজারেটরে গাজর সংরক্ষণের সময় অবশ্যই প্লাস্টিকের নরম ব্যাগ ব্যবহার করুন।