ইসলামের অর্থনৈতিক নীতি তথা ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সার্বিক লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যেক মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর পূরণ করা এবং যতটুকু সম্ভব তাদের আভিজাত্যপূর্ণ চাহিদাগুলো পূরণে সহায়তা করা।
অর্থাৎ শুধুমাত্র বাজারের আন্তক্রিয়ার উপরে চাহিদা পূরণকে ছেড়ে না দিয়ে বরং সবার মৈলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা চালানো হবে ইসলামী অর্থনৈতিক নীতিমালার উদ্দেশ্য।
এজন্যই দেখা যায় খিলাফতের প্রত্যেক নাগরিকের সধরনের মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা) সার্বিকভাবে পূরণের বিষয়টিকে ইসলামী শরীয়াহ নিশ্চিত করেছে। এই বিষয়টি অর্জন করা হয় প্রত্যেক সক্ষম ব্যক্তিকে কাজে নিয়োগদানের মাধ্যমে যার ফলে সে তার নিজের ও তার উপর নির্ভরশীলদের মৌলিক চাহিদা পূরণে সমর্থ হয়; এ বিষয়টি সেসব প্রমাণাদির উপর ভিত্তি করে নেয়া হয়েছে যেখানে মুসলিমদেরকে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে, যেমন:
“যে ব্যক্তি হালাল এবং উপযুক্ত উপায়ে জীবিকা আহরণের চেষ্টা করল, সে আল্লাহর সাথে এমনভাবে দেখা করবে যেন তার মুখ পূর্ণচন্দ্রের ন্যায় হবে; এবং যে ব্যক্তি ঔধ্যত্বের সাথে ও সীমালংঘনের মাধ্যমে তা চাইবে সে এমন অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে যেন তিনি (আল্লাহ) তার প্রতি রাগান্বিত।” (বুখারী)
রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন: “হে আদম সন্তান, তোমাদের সম্পদের মধ্যে তোমরা যা কিছু খেয়েছ বা করেছ, যা কিছু পরিধান করেছ বা ব্যয় করেছ এবং যা কিছু দান করেছ বা নিজের জন্য রেখেছ সেগুলো বাদে তোমাদের আর কী আছে?” (বুখারী)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা বলেন:
“তোমরা ইসরাফ (অপব্যয় অর্থাৎ খরচের ক্ষেত্রে ইসলামের সীমা অতিক্রম করে ফেলা) করোনা। তিনি ইসরাফকারীদের পছন্দ করেন না।” [সুরা আরাফ: ৩১]
“আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন, তদ্বারা পরকালের গৃহ অনুসন্ধান কর এবং ইহকাল থেকে তোমার অংশ ভুলে যেওনা। তুমি অনুগ্রহ কর, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হয়োনা।”
[সুরা কাসাস:৭৭]
ইসলাম চায় প্রত্যেক মানুষ তার নিজের এবং তার উপর নির্ভরশীলদের মৌলিক চাহিদা তথা পর্যাপ্ত খাদ্য, পোশাক ও বাসস্থান নিশ্চিত করুক। এবপর যতটুকু সম্ভব অন্যান্য আভিজাত্যপূর্ণ চাহিদা পূরণ করার স্বাধীনতা ইসলাম দিয়েছে। যদি কেউ এরূপ সংস্থান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসলামী রাষ্ট্র তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করতে বাধ্য।
ইসলামের দৃষ্টিতে যে কোন মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হল খাদ্যের চাহিদা এবং এজন্য লোকজনের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি উন্নয়ন একটি অপরিহার্য বিষয়। এই বিষয়টি নিশ্চিত করতেই ইসলাম শ্রম এবং জমির মালিকানা নিশ্চিত করেছে।