করোনাভাইরাস এর কারনে বন্ধ ছিল পর্যটন এলাকাগুলো। তেমনি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সুন্দরবন। তবে দীর্ঘ সময় থাকার পর আজ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে সুন্দরবন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। তবে সেটাও শর্তসাপেক্ষে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘসময় ধরে ফুটট্রেইলার, ওয়াচটাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ব্যবহার হয়নি। সেগুলো এখন ময়লা জমে ও ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, ভ্রমণকালে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি, মাস্ক পরিধান ও ২৫ জন করে গ্রুপ ভাগ করে নিতে হবে। এই ছোট ছোট গ্রুপ করে নৌযান থেকে বনে নামতে হবে এবং ঘুরতে হবে। একসঙ্গে বেশি লোক নামা কিংবা ঘোরাফেরা করতে পারবে না।
তিনি আরও জানান যারা এসব শর্ত ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বন বিভাগ।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবার পর থেকেই ট্যুরিস্ট কোম্পানিগুলো নতুন আঙ্গিকে কাজ শুরু করেছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ব্যবহার করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নিজস্ব গ্রুপে নানা অফার সংযুক্ত করে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ট্যুর অপারেটর সমূহ। দীর্ঘদিনের বন্দিদশা থেকে একটু প্রশান্তির আশায় ভ্রমণপিপাসুরাও ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে অগ্রিম যোগাযোগ ও বুকিং দিচ্ছেন।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন খুলনার সাধারণ সম্পাদক এম নাজমুল আযম ডেভিড। তিনি জানান, খুলনায় প্রায় ট্যুর অপারেটর আছে শতাধিক । যাদের মধ্যে ৬৩টি অপারেটর রেজিস্ট্রি করা। পর্যটন শিল্পর সাথে সম্পৃক্ত আছেন প্রায় ১৫০০ লোক। বনে প্রবেশে এতদিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় ট্যুর অপারেটরদের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। তারা এখন সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন কিছুটা হলেও।
একই সাথে দুই মাসের অবরোধ শেষে আজ থেকে সুন্দরবনে আবার শুরু হচ্ছে মৎস্য ও কাঁকড়া আহরণ। সকল প্রস্তুতি শেষ করে বনে যাওয়ার অপেক্ষায় শরণখোলা অঞ্চলের পাঁচ হাজারের বেশি জেলে। বন অফিস থেকে পাস পারমিট পেলেই রওনা হবেন।
১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রজননের জন্য সব ধরনের বনজসম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করেছিল বন বিভাগ।
করোনা মহামারির কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। অন্যদিকে সুন্দরবনের মাছের প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার কারণে এ বছরের ২৪ জুন থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জেলেদের বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।