আমাদের দেশে গবাদি পশু পালন বেশ কয়েক বছর ধরে বাড়ছে। বিশেষ করে শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা এগিয়ে এসেছে পশু পালনে। যার ফলে পশু পালন আগের থেকে অনেক বেড়েছে স্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। তবে গবাদি পশুর সংখা বাড়লেও বাড়েনি তাদের খাদ্যের উৎস। তাই বিভিন্ন ধরনের ঘাস চাষের দিকে মনোনিবেশ করা যেতে পারে এখন। সুদান ঘাসের সফল চাষ এক্ষেত্রে অনেকটা সহায়ক হতে পারে আমাদের জন্য। সুদান ঘাসের সফল চাষ পূরণ করতে পারে গবাদিপশুর খাদ্য ঘাটতিও।
সুদান ঘাস বিভিন্ন ধরনের ঘাসের মধ্যে অন্যতম।
গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা এ ঘাস চাষ করে মেটানো সম্ভব।
উচ্চ ফলনশীল সুদান ঘাস গবাদি পশু মোটাতাজাকণের জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হয়।
সুদান ঘাস চাষ করা উত্তম তুলনামূলকভাবে যেসব জমিতে পানি জমে থাকে না সেই সকল জমিতেই।
সব ধরনের মাটিতেই জন্মে।
তবে এর সবচেয়ে বেশি ফলন বেলে দো-আঁশ মাটিতে হয়।
সারাবছরই সুদান ঘাসের বীজ রোপণ করা যায়।
প্রচণ্ড শীত এবং বর্ষার পানির সময় বীজ বপন করা যায় না।
চাষ পদ্ধতি:
এ ঘাস চাষের জন্য জমিতে তিনটি থেকে চারটি চাষ দিতে হয়।
মই দিয়ে আগাছামুক্ত করার পর রোপণ করতে পারলে ভালো হয়।
প্রতি একর মাটির সঙ্গে দেড় টন থেকে দুই টন জৈবসার মিশিয়ে দিতে হবে।
এছাড়া ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ ইত্যাদি সার ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে বীজ বপন করবেন
প্রথমে বীজ ১-২ ঘণ্টা মিষ্টি রোদে শুকিয়ে নিন।
তারপরে নরমাল করে নিয়ে ২৪-৪৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
তারপরে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে।
বীজ জার্মিনেশন হয়ে যায় পরবর্তী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।
কিভাবে সার প্রয়োগ ও পানি সেচ হবে
সার এবং পানির প্রয়োজন ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য ।
বর্ষা মৌসুমে পানি সেচের কোন প্রয়োজন হবে না।
বর্ষা সময় ছাড়া বাকি সময় সাধারণত পানি সেচের প্রয়োজন হয়।
সার হিসেবে ইউরিয়া ১৫০ কেজি, টিএসপি ৮০ কেজি, ও এমওপি ৭০ কেজি সার প্রয়োগ করতে হবে।
ঘাস কিভাবে কাটবেন
বীজ থেকে চারা হবার পর থেকে ৩৫-৪০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করা যায়।
মাটির ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে ঘাস কাটতে হয়।
তিন সপ্তাহ পরপর ঘাস কাটা যায়।
প্রথম কাটিং-এ ফলন একটু কম হয়।
এরপর দ্বিতীয় কাটিং থেকে পরবর্তী ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত ফলন বাড়তে থাকে।
এরপর ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
সেকারণে বীজ অথবা কাটিং বা মোথা পুনরায় লাগাতে হবে।
প্রতিবার ঘাস কাটার পর একর প্রতি ৬০-৭০ কেজি ইউরিয়া, ৪০-৫০ কেজি টিএসপি, ৪০-৫০ কেজি এমওপি এবং ২-৩ টন গোবর বা কম্পোস্ট সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
পশুকে কিভাবে খাওয়াবেন
জমি থেকে ঘাস কাটার পর লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ঘাস শুকিয়ে না যায়।
আস্ত ঘাস গবাদি পশুকে সরাসরি খেতে দিলে অপচয় বেশি হয়।
তাই ২-৩ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে খাওয়ানো ভালো।
খড়ের সাথে মিশিয়ে এই কাটা ঘাস খাওয়াতে হবে।
সুদান ঘাস শুকিয়ে সংরক্ষণ করাটা তেমন সুবিধাজনক নয়।
কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে কাঁচা ঘাস সাইলেজ করে সংরক্ষণ করা যায়।