ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মৌলভীবাজারে শতাধিক কৃষকের ‘ব্রি ২৮’ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হওয়া ধান কেউ গোখাদ্য হিসেবে কেটে নিচ্ছেন, কেউ ফেলে রাখছেন জমিতেই। এবার লাভ তো দূরের কথা, বোরো আবাদের খরচ তোলা নিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। গবেষকরা বলছেন, সম্ভাব্য দুটি কারণে চিটা হতে পারে। একটি কারণ হলো ঠাণ্ডা আবহাওয়া; আরেকটি ‘ব্লাস্ট’। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করছে। সরকারের বরাদ্দ এলে তা ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে।
এদিকে ব্রি ২৮ নিয়ে কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় কৃষকরা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, ‘ব্রি ২৮’ চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। অন্যদিকে কৃষকরা বলছেন, বীজের দোকানগুলো উচ্চফলনের কথা বলে তাদের কাছে ‘ব্রি ২৮’ বিক্রি করেছেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘মূলত দুটি কারণে ব্রি ২৮ ধানের এই সমস্যা হতে পারে। প্রথমটি হলো ঠাণ্ডাজনিত এবং দ্বিতীয় হলো ব্লাস্ট রোগ। ব্রি ২৮ ধানের অনুমোদিত রোপণের সময় হলো নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ। তবে আমাদের দেশের অনেক কৃষক আগেই তা বপন করেন। ফলে ঠাণ্ডার কারণে ধান চিটা হয়ে যায়।’
আবদুল লতিফ আরও বলেন, ‘ব্লাস্ট ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগ হলে সাধারণত করার কিছু থাকে না। মূলত ধানের ফুল বা শিষ বের হওয়ার সময়েই এ ছত্রাক আক্রমণ করে। তাই প্রতিবছরই আবহাওয়া বুঝে আমরা কৃষকদের আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে থাকি। এই বার্তা আমাদের ওয়েবসাইটের পাশাপাশি প্রতিটি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাছে পৌঁছে যায়।’
এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা ব্রি ২৮, ব্রি ৮১, ব্রি ৫০, ব্রি ৬৩ জাত চাষ করেন, তাদের সতর্ক থাকতে হয়। কারণ ব্লাস্ট রোগটি এসব জাতে বেশি দেখা দেয়। তবে আশার কথা হলো, আমরা খুব শিগগিরই হয়তো রোগ প্রতিরোধী ব্রি ২৮ জাতের বীজ কৃষকদের দিতে পারব।’