আগাম বন্যাতে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ছিল না। সাথে কম খরচে স্বল্প সময়ে লাভ বেশি হয়। তাই এখন ভুট্টার চাষে ঝুঁকছেন কিশোরগঞ্জের হাওরের কৃষকেরা। পাশাপাশি উৎপাদন খরচের তুলনায় কম লাভ হওয়ায় জেলার হাওরাঞ্চলে ধান চাষ কমেছে।
বিকল্প ফসল হিসেবে এখন ভুট্টা এখন জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
ভূট্টার চাষে কৃষকেরা ঝুঁকছেন এ কারণে।
উৎপাদন খরচ কম, দাম ভালো ও চাহিদা বেশি।
আর তাই ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।
এলাকার কয়েকজন চাষির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়।
তারা জানান, কয়েক বছর ধরে লোকসান হচ্ছে।
যার কারণে চাষিরা কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর কারণে হাওরাঞ্চলে ধান চাষের ঝুঁকিও রয়েছে প্রচুর।
সে দিক থেকে ভুট্টা চাষে ঝুঁকিও কম।
বর্ষা আসার আগেই ভুট্টার ফলন ঘরে তুলতে পারেন চাষিরা।
একসময় উজানের উঁচু এলাকায় ভুট্টা চাষ হত।
তবে বিকল্প ফসল হিসেবে বহুল আলোচিত ভুট্টার আবাদ এখন হাওরেও দিন দিন বাড়ছে।
কিশোরগঞ্জের নিকলী, মিঠামইন, বাজিতপুর ও অষ্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা হাওরবেষ্টিত।
এখন এসব অঞ্চলে আগের চেয়ে ভুট্টার আবাদ বেশি হচ্ছে।
বাজারে প্রচুর চাহিদা থাকার কাড়নে ভুট্টার দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকেরা।
গত বছর প্রতি মণ ভুট্টার দাম ছিল ৭০০-৭৫০ টাকা।
এ বছর প্রতি মণ ১২০০ টাকায় বিক্রি করছেন কৃষকরা।
আর তাই গত বছরও ধানের আবাদ হওয়া জমিতে মাঠের পর মাঠ ভুট্টার খেত দেখা যায় এবার।
সরেজমিনে নিকলী সদর বাজারে গেলে দেখা যায়, নারী-পুরুষসহ পরিবারের ছোট–বড় সবাই ভুট্টা মাড়াই ও ভাঙানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে কথা বলে জানা যায়, নিকলীতে ২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে।
অন্যদিকে মিঠামইনে ২ হাজার ১২০ হেক্টর, বাজিতপুরে ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর, অষ্টগ্রামে ৫২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় এবার সব মিলিয়ে মোট ৮২৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ছাইফুল আলম।
তিনি বলেন, এর আগে এ জেলায় ভুট্টা চাষ কম হত।
তবে এবার এই জেলায় ৮২৮৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন এটি ক্রমেই বাড়ছে।