বোরো চাষে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে যশোরের ভবদহ অঞ্চলে। এলাকার বিলগুলো জলাবদ্ধ হয়ে আছে দীর্ঘদিন যাবত। পানি না সরলে অন্তত ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা সম্ভব হবে না।এমনটাই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। বিল থেকে পানি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা না নিলে এসব জমিতে ধান আবাদ অসম্ভব বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে ভবদহ অঞ্চলের ৫০ হাজার কৃষক বোরো চাষে অনিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
ভবদহ অঞ্চল সমূহে ৫২টি বিল রয়েছে
ভবদহ অঞ্চল হিসেবে যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলা এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ পরিচিত।
অন্তত ৫২টি ছোট-বড় বিল আছে ভবদহ অঞ্চলে। এসব বিলের পানিমুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদ-নদীর জোয়ারভাটার সঙ্গে ওঠানামা করে।
কিন্তু প্রচুর পরিমান পলি পড়ার কারণে নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়েছে।
যার ফলে এ সকল নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হতে পারছে না।
এতে বর্ষা মৌসুমে বিলগুলোতে দেখা দেয় ভীষণ জলাবদ্ধতা।
গত ১৮ থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের ভারী বৃষ্টিতে অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার অন্তত ১২০টি গ্রাম জলিাবদ্ধতার কারণে তলিয়ে যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভবদহ অঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার কৃষক আছেন।
ওই অঞ্চলে বোরোর আবাদ হতো প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
গত বছর ভবদহ অঞ্চলে বোরো চাষ হয়েছিল প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে।
কৃষকেরা বিল বোকড়, বিল খুকশিয়া, বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়া, বিল ডুমুর এবং বিল পায়রার ওপরের অংশে বোরো ধান চাষ করেছিলেন ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবদহ অঞ্চলের বিল গুলোতে শুধু পানি আর পানি।
বিলের কোথাও কোনো অংশেই কোন ধানখেত নেই।
মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয়ে সূত্র অনুসারে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি বোরো চাষের।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান।
তিনি বলেন, ভবদহ অঞ্চলের বিলগুলো কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
কিন্তু এবারের অবস্থা আরও খারাপ, পানি নামছেেই না।
এতে বোরোর আবাদ বিলগুলোতে সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ।
তিনি জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে টিআরএমের (টাইডল রিভার ম্যানেজমেন্ট-জোয়ারাধার) গুরুত্বের উল্লেখ করেন।
তবে বারবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও টিআরএম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না বলেই তিনি জানান।
পাউবো যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধান করতে বড় আকারে সেচের কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি আট কিলোমিটার নদী খনন করা হবে, যাতে পানির প্রবাহ সৃষ্টি হবে।