কম সময়ে, কম খরচে উৎপাদন বেশি হয়। নওগাঁর কৃষকরা বিনা-১৭ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাদের ভাষ্যমতে , এই ধান সার-পানি সাশ্রয়ী, আলোক সংবেদনশীল ও খরাসহিষ্ণু। অন্য যে কোন জাতের ধানের চেয়ে এক মাস আগেই বিনা-১৭ কাটার উপযোগী হয়। আর তাই বিনা-১৭ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন প্রায় সকল কৃষক।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) উপকেন্দ্র ও নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ জাতের ধানের আবাদে কৃষককে উদ্বুদ্ধ ও সহায়তা করে যাচ্ছেন।
জেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুসরে, নওগাঁয় চলতি মৌসুমে আমনের আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে ১ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বিনা-১৭ জাতের ধান।
অন্যদিকে রাণীনগরে ৫২০ হেক্টর, ধামইরহাটে ১২৫ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ৫ হেক্টর ও মান্দা উপজেলায় ২০ হেক্টরসহ অন্যান্য উপজেলায় আংশিক আবাদ হয়েছে বিনা-১৭ জাতের ধান।
একে গ্রিণ সুপার রাইস নামেও ডাকা হচ্ছে
বিনা-১৭ জাতের ধানে পানি কম লাগে।
এ কারণে অনেকে একে গ্রিন সুপার রাইস নামেও অভিহিত করেছেন।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এ জাতের ধানে ইউরিয়া সার এক-তৃতীয়াংশ প্রয়োজন হয়।
এছাড়া সেচ ৫০ শতাংশ কম লাগে।
১১০ থেকে ১১৫ দিন ধানের জীবনকাল।
২০০ থেকে ২৫০ দানা থাকে এর প্রতি শিষে।
প্রতি বিঘায় প্রায় ২৬ থেকে ২৭ মণ ফলন হয়ে থাকে বিনা-১৭ ধানে।
বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ দুই থেকে তিন হাজার টাকা কম হয় যেকোন জাতের ধানের তুলনায়।
নওগাঁ জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কে এম মঞ্জুরে মওলা। তিনি জানান, কৃষকদের প্রয়োজনীয় বীজ ও সার সহায়তা দেয়া হচ্ছে বিনা-১৭ চাষে।
কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবসও পালন করা হচ্ছে প্রতিটি উপজেলায়।
ড. মো. হাসানুজ্জামান চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিনা-র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
তিনি জানান, একটি স্বল্পমেয়াদি জাতের ধান বিনা-১৭।
এটি খরাসহিষ্ণু জাতের ধান। এর চাষে ৩০ শতাংশ পানি কম প্রয়োজন হয়।
দোফসলী জমিতে এখন এ জাতের ধান চাষে তিনটি ফসল করা সম্ভব।
বিনা ধান-১৭ স্বল্প জীবনকালীন জাতের ধান।
এই ধান কাটার পর একই জমিতে কৃষক সরিষা, মসুর বা আলু চাষ করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে জমি তৈরি করে তাতে বোরো ধান লাগানো যাবে।
তারা নওগাঁ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলার কৃষকদের মাঝে প্রচার চালাচ্ছেন।
এই ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে আপ্রাণ চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।