পাবনার চাষিরা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন। কন্দ বা মূলকাটা পেঁয়াজ চাষ করে কম লাভবান হয়েছেন। তাই তারা হালি বা চারা পেঁয়াজ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। এবার জ্বালানি তেল ও সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তারপরও উৎসবমুখর পরিবেশে পেঁয়াজ আবাদ চলছে। পাবনার চাষিরা পেঁয়াজ চাষে পার করছেন তাদের সমস্ত সময়।
পাবনা থেকে মেটি উৎপাদনের এক চতুর্থাংশ আসে
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবছর দেশে প্রায় ২৫-২৬ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের বার্ষিক উৎপাদন হয়।
পাবনা জেলা থেকেই উৎপাদন হয় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন।
এটি মোট উৎপাদনের এক চতুর্থাংশ।
পাবনা জেলার সাঁথিয়া-সুজানগর উপজেলা থেকে প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।
এ দুটি উপজেলায় পেঁয়াজের এক পঞ্চমাংশ উৎপাদিত হয় পাবনার।
কৃষি কর্মকর্তাদের মারফত জানা যায়, জেলার চাষিরা দুটি পদ্ধতিতে পেঁয়াজের আবাদ করেন।
এর একটি কন্দ বা মূলকাটা বা মুড়ি পেয়াজ এবং অন্যটি চারা বা হালি পদ্ধতি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, পাবনা জেলায় এবার হালি (চারা) পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে।
তার আশা, এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার পাবনা থেকে অন্তত সাত লাখ ৪৯ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তার ভাষ্যমতে, গত বছর ৫২ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
দেশের অন্যতম বড় পেঁয়াজের হাট সাঁথিয়ার বনগ্রাম।
এই হাটে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি মণ কন্দ পিঁয়াজ সাড়ে ৮০০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে ভালোমানের কিছু পেঁয়াজ ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাষিরা জানান, গত বছর ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা মণ দর কন্দ পেঁয়াজের দাম ছিল।
বাংলাদেশ ফার্মার্স এসোসিয়েশন (বিএফএ) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পাবনা জেলার বিশিষ্ট চাষি আলহাজ্ব শাহজাহান আলী বাদশা।
তিনি জানান, দেশে জনসংখ্যা বাড়ার কারণে পেঁয়াজের চাহিদাও বেড়েছে।
সে কারণে বিঘা প্রতি ফলন বাড়ানোর বিকল্প নেই।
দোতলা কৃষির উদ্ভাবক, পাবনার কৃষিবিদ জাফর সাদেক।
তিনি জানান, বছরের শেষ দিকে অনেক সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ে।
তবে সাধারণ চাষিরা সে দাম পান না।
তা নিয়ে যান মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা।
পেঁয়াজ চাষে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার সরকারি ঘোষণা থাকলেও সাধারণ চাষিরা সে সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানান এই কৃষিবিদ।