বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে ধান ও সবজি চাষের প্রবণতা কমে গেছে সেচ সংকটের কারণে। এ অঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে এখন তুলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কম সেচ ও বৃষ্টির পানিতে কাজ হয়। তাই তুলা চাষে ঝুঁকছেন অনেক চাষিরা। এটির চাষ লাভজনক বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
তুলা চাষে আগ্রহ
বিঘায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা যায় যদি ফলন ভালো হয়।
আষাঢ় মাসের বৃষ্টির পানিতে বীজ বপন করা হয়।
অগ্রহায়ণ মাসে ঘরে তোলা যায় তুলা।
বরেন্দ্র অঞ্চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, গোমস্তাপুর ও নওগাঁর পোরশায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত ২১০ জন চাষি প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছেন।
তুলার চাষ কেবল মাত্র ৮০০ মিলিমিটার পানিতেই সম্ভব।
এর ফলে তুলা চাষ পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার পূর্ব লক্ষ্মণপুর গ্রামের সাঁওতাল যুবক জুসেন টুডু।
তাঁর এক মামা রুবেল বাসকি ও নানি মণি মুরমুকে নিয়ে চার বছর থেকে তুলার চাষ করছেন।
প্রায় আট বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছেন তারা।
তিনি জানান যে, প্রথম বছর খুব একটা লাভ পাননি।
কিন্তু দুই বছর ধরে এক লাখ টাকার বেশি লাভ হয়েছে তাদের।
কৃষি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়নরত জুসেন টুডু।
তিনি আরও বলেন, উঁচু বরেন্দ্রভূমিতে এক বিঘা জমিতে ধান চাষে পাঁচ হাজার টাকা লাভ করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তুলা চাষ করে সেখানে সহজেই ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাভ করা যায়।
তুলার দাম গত বছর ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা মণ।
এ বছর প্রতি মণ ৩ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে তুলা।
তুলার বীজ জুলাই মাসে বৃষ্টির পানিতে বপন করেছেন।
এরপর আর সেচ দেবার প্রয়োজন হয়নি।
ডিসেম্বরেই তিনি তুলার ফলনের আশা করছেন।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নাচোল ইউনিটের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বর্মণ।
তিনি জানান যে, উপজেলায় তুলা চাষের সঙ্গে ৪৮ জন চাষি জড়িত।
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
তার সঙ্গে তুলার চাষ নিয়ে কথা হয়।
তিনি জানান, এক কেজি বোরো ধান উৎপাদন করতে তিন থেকে চার হাজার লিটার পানি লাগে।
সেখানে তুলা চাষ সম্ভব ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিমিটার পানিতেই।
বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে তাই পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী তুলা চাষ।