Friday, 12 December, 2025

টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পের বেহাল অবস্থা


টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পের বেহাল অবস্থা।  টাঙ্গাইলের তাঁত মালিকরা কোনোভাবেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। একের পর এক সমস্যায় পড়ে পুঁজি হারিয়ে এরইমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ তাঁত বন্ধ হয়েছে। অনেকে ধারদেনা করে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আবারো সুতার দামবৃদ্ধি ও লোডশেডিংয়ে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।

অন্যদিকে শ্রমিকদের ব্যয়ের তুলনায় আয় কমেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট সবাই বেকায়দায় পড়েছেন। তাই তাঁত শিল্পের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

তাঁত পল্লিতে বিরামহীন তাঁতের খট খট শব্দ থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ তাঁত বন্ধ হওয়ায় সেখানে এখন শুনশান নীরবতা। দীর্ঘদিন তাঁত বন্ধ থাকায় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতিও।

আরো পড়ুন
পাহাড়ে বারি-৪ লাউ চাষে সাফল্য: কাপ্তাইয়ের রাইখালী গবেষণা কেন্দ্রে বাম্পার ফলন
লাউ চাষের বাম্পার ফলন

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবশেষে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলাস্থ রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (পিএআরএস) বারি-৪ জাতের লাউ চাষে বড় ধরনের সাফল্য Read more

সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান

বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে সকল পক্ষের স্বার্থকে সমন্বিত করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি Read more

করোনা মহামারি যেন তাঁত শিল্পের জন্য একটি অভিশাপ হয়ে এসেছিল। সেসময় বেশির ভাগ তাঁতমালিক বড় অঙ্কের লোকসানে পড়েন। প্রায় ৭৫ শতাংশ তাঁত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

বন্ধ হওয়া ২৫ শতাংশ তাঁতমালিকরা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে তাঁতগুলো চালু করলেও আগের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। বর্তমানে সুতার দামবৃদ্ধি ও লোডশেডিংয়ের কারণে তাদের আবার লোকসান গুনতে হচ্ছে। এদিকে, উৎপাদন খরচ বেশি হলেও বেশি দামে শাড়ি বিক্রি করতে পারছেন না মালিকরা। অপরদিকে,

লোডশেডিংয়ের কারণে শ্রমিকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অলস সময় কাটতে হচ্ছে। এতে তাদের আয়ও কমে গেছে। তাঁত শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই লোকসানের সম্মুখীন। সবারই টালমাটাল অবস্থা।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে এই খাতের শ্রমিকদের আয় দিয়ে পরিবার পরিজনের মুখে তিনবেলা আহার তুলে দেয়া খুবই কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তাঁতমালিকদের পাশাপাশি শ্রমিকরাও এ শিল্পের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

তাঁত শিল্পে করোনার প্রভাব

তাঁতমালিকরা জানান, করোনায় লাখ লাখ টাকা লোকসান কাটিয়ে উঠতে নতুন করে ধারদেনা করে কাপড় উৎপাদন শুরু করতে গিয়ে আবারও তারা নতুন ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। এই শিল্প সরকারী নজরদারি ছাড়া টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না বলেও মনে করছেন তারা।

টাঙ্গাইল জেলা তাঁতমালিক সমিতির সভাপতি রগুনাথ বসাক বলেন, একদিকে নানা কারণে আগের চেয়ে শাড়িকাপড়ের চাহিদা কমে গেছে। অন্যদিকে সুতা ও কাঁচামালের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বাড়লেও শাড়ির দাম বাড়েনি।

উল্লেখ্য, দুই বছর আগেও টাঙ্গাইলে ৫০ হাজার তাঁতে এক লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করতেন। বর্তমানে জেলায় মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার তাঁত চলমান রয়েছে। এতে মাত্র ২০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন।

0 comments on “টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পের বেহাল অবস্থা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ