দেশে বাদাম এর উৎপাদনে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে চাঁদপুরে বাদামের ভালো ফলন হয়েছে এ বছর। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিশেষ করে মতলব উত্তর উপজেলায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে বাদামের চাষে। উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে এখন কৃষকরা বাদাম ঘরে তুলছে ও বাজারে বিক্রয় করছে। চাঁদপুরে বাদামের ভালো ফলন দেশে যেন নতুন এক সম্ভাবনা কে ইশারা করছে।
চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের বাদাম
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে প্রচুর বাদামের চাষ হয়।
মেঘনা, ধনাগোদা নদীর তীরবর্তী চর সমূহ যেমন ষাটনল, চর চারআনি, চর কাশিম, বোরোচর, চর ওয়েস্টার, চর বাহাদুরপুর, নয়াচর, চর লক্ষ্মীপুরসহ আরও কয়েকটি এলাকায় বাদামের চাষ হয়েছে।
সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ হেক্টর বেলে জমিতে বাসন্তী, বারী চীনাবাদাম-৫, বারী চীনাবাদাম-৬, সিংগা সাইস্টোরসহ বিভিন্ন জাতের বাদামের আবাদ হয়।
এ সকল গ্রামের তিন শতাধিক কৃষক তাঁদের পৈতৃক জমিতে বাদামের ওই আবাদ করে থাকেন।
গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর, ষাটনল, বোরোচর, নয়াচরসহ আরও কয়েকটি এলাকা ঘুরে বাদামের খেত দেখা যায়।
সেখানকার বেলে জমি সমূহে রাশি রাশি বাদামখেত রয়েছে দিগন্তজুড়ে।
সবুজ বাদামখেতের সৌন্দর্যে গোটা চরাঞ্চল ভরে গেছে।
স্থানীয় কৃষকেরা ওই বাদামখেতের পরিচর্যার কাজে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তাদের কেউ থোকা থোকা কাঁচা বাদাম খেত থেকে তুলে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন।
সমগ্র এলাকা কাঁচা বাদামের ঘ্রাণে ছেয়ে গেছে।
বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা
উপজেলার ষাটনল এলাকার কৃষক মো. গিয়াস উদ্দিন।
তিনি জানান যে, এবছর ৬০ শতাংশ জমিতে বাদামের আবাদ করেছেন এই চাষি।
অনুকূল আবহাওয়া, পোকামাকড়ের উপদ্রব তেমন ছিল না সেই সাথে সারও দিতে হয়নি তেমন।
কম খরচেই তার খেতে বাদামের ফলন এবার খুব ভালো হয়েছে।
প্রতি বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ মণ বাদামের ফলন হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে সেগুলো বিক্রি করে ভালো দামও পাচ্ছেন।
প্রতি মণ কাঁচা বাদাম এর বর্তমান বাজারদর ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা।
কৃষক গিয়াস উদ্দিন আরও জানান যে, উৎপাদিত বাদাম বাজারে তিনি ইতিমধ্যেই বিক্রি শুরু করেছেন।
উৎপাদন খরচ মিটিয়ে খুব ভালো লাভের আশা করছেন এই চাষি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন।
তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ও রোগ-বালাইয়ের উপদ্রব তেমন ছিল না।
তাই এবার তাঁর উপজেলায় বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে।
বাদামের কেবল ব্যাপক ফলন হয়নি সাথে সাথে এর দানাগুলোও বেশ পুষ্ট হয়েছে।
বাদামগুলো ভালো দামে বিক্রি হবার কারণে ভবিষ্যতে চরাঞ্চলে আরও বেশিসংখ্যক কৃষক বাদাম চাষে আগ্রহী হবেন বলে এই কর্মকর্তা আশা করছেন।