তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তার ভাষ্যমতে, দেশে প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে এক শতাংশ হারে। গত ৫০ বছরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে কৃষিজমির পরিমাণ। অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি-কলকারখানার কারণেই কৃষিজমি কমছে এক শতাংশ হারে বলেই তিনি মনে করেন। বর্তমানে ৩০ শতাংশ মানুেই নগরবাসী। ১৫ বছর পর তা হবে প্রায় ৫০ শতাংশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে এটি আয়োজিত হয়। ‘বিজয়ের ৫০ বছর: কৃষি খাতে অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিজমি কমছে এক শতাংশ হারে বলে তিনি জানান।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জমির উৎপাদনক্ষমতা কমে গেছে
হাছান মাহমুদ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন, জমির উৎপাদনক্ষমতা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হ্রাস পেয়েছে।
আবার দেশে প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে এক শতাংশ হারে।
২০ বছর পর সব ধরণের উদ্ভাবন কাজে লাগিয়ে আজকের মতো উৎপাদন সম্ভবপর হবে না।
এ নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।’
কৃষি খাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে এমনটা উল্লেখ করেন তিনি।
সেই সাথে জানান যে, গত ৫০ বছরে দেশের খাদ্য উৎপাদন চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশের এমন সাফল্য গোটা বিশ্বকেই বিস্মিত করেছে।
বাংলাদেশকে আজ পৃথিবীর সামনে কেসস্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঝড়, বন্যা, জ্বলোচ্ছাসের দেশ বাংলাদেশ।
এই দেশে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন ও মানুষের ঘনত্ব সর্বোচ্চ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বন্যা ও অন্যান্য দূর্যোগ দেশের নিত্যসঙ্গী।
এ সবকিছু মোকাবিলা করেও কৃষিতে বিস্ময়কর উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্ষম হওয়া আমাদের দেশ সত্যিই পৃথিবীর সামনে উদাহরণ।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান।
তার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন।
কৃষিবিদেরা দেশের ও পৃথিবীর সম্পদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কৃষি অর্থনীতিবিদ মো. মকবুল হোসেন এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম কামরুজ্জামান এ সভায় আলোচনা করেন।
তাঁদের আলোচনায় কৃষি খাতে দেশের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী কৃষিতে বিস্ময়কর অর্জনের জন্য কৃষিবিদ ও কৃষকদের অবদানকে সবচেয়ে বড় উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের কৃষিবিদেরাই ফসলের উচ্চ ফলনশীল ও উপকূলে আবাদযোগ্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছেন।
এগুলো দেশের জন্য সম্পদ এমনকি পৃথিবীর জন্যও সম্পদ।
যা না হলে দেশের পক্ষে এই অর্জন সম্ভবপর হতো না।
আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীতে ৯২তম দেশ।
কিন্তু ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে।
অন্যদিকে মিঠাপানির মাছ ও আলু উৎপাদনে সপ্তম অবস্থানে।
তথ্যমন্ত্রী আরও জানান যে, নেপালে যখন ভূমিকম্প হলো, বাংলাদেশ তখন ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছে।
এটি কোনো জাদু নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই এমনটা সম্ভবপর হয়েছে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম তাঁর বক্তব্যে কৃষিকে প্রাকৃতিকভাবে সবুজ এই দেশের সবচেয়ে বড় ভিত বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান যে, উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে টেকসই ও যুগোপযোগী কৃষি অর্থনীতির বিকল্প নেই।