ক্ষুরা রোগের সংক্রমণ ঘটেছে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খামারসহ কৃষকদের পালিত ৪০টি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
এদিকে রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে টিম গঠন করে খামারে এবং কৃষকদের বাড়িতে পালিত গরুগুলোকে এফএমডি ভ্যাকসিন দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ।
ভুক্তভোগী খামার মালিক ও কৃষকরা জানিয়েছেন, উপজেলার চাঁদনী বজরা এলাকায় ১০টি খামারে গরুর ক্ষুরা রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। এর ফলে আরাফ ডেইরি ফার্মের একটি গাভীসহ ৮টি বাছুর, আবুল কালামের ৫টি এবং এন্তাজ মিয়ার একটি গরু মারা গেছে।
এছাড়া যাদুপোদ্দার গ্রামের আফজাল মিয়ার ২টি, একই গ্রামের হায়দার আলীর ৬টি, কামাল পাশার ৩টি এবং তবকপুর মিয়াপাড়া গ্রামের রোকুনুজ্জামানের ৫টি, হায়দার আলীর ৩টি, হাতিয়া হিজলী গ্রামের হারুন মিয়ার ৩টি ও পরেশ চন্দ্রের ২টি গরুসহ ৪০টি গরু মারা গেছে।
উলিপুর আদর্শ কেন্দ্রীয় দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল হোসেন জানান, ক্ষুরা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যান্যবার এ রোগে আক্রান্ত হলেও মারা যেত না। এবার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। আক্রান্ত হলে আর বাঁচানো যাচ্ছে না। এতে বাছুরগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে বেশি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আজিজ জানিয়েছেন, ক্ষুরা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বিষয়ক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
সেই সাথে ১০ লিটার পানিতে এক গ্রাম পটাশিয়াম পারমেঙ্গানেট মিশিয়ে আক্রান্ত গরুর মুখ ও পা দিনে ২ বার পরিষ্কার করার পর মধুর সাথে সোহাগা ভাজা মিশিয়ে মুখে ও জিহ্বায় এবং সালফা লিনামাইট পাউডার পায়ে লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, এই উপজেলায় বড়, ছোট ও প্রান্তিক পর্যায়ে ২৫০টির মতো গরুর খামার রয়েছে। এরমধ্যে ২০টির মতো খামারের ৬৫টি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে বাছুর গরু আক্রান্ত হয়েছে বেশি। শীতের পাশাপাশি ভারত থেকে আসা ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরুর দ্বারা এই রোগ ছড়িয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হাই জানান, বজরা এলাকায় তিনটি টিম ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি এবং করণীয় সম্পর্কে গরু পালনকারী খামারি ও কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।