গত কয়েকদিন ধরে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস বলছে আরও বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। এই সময়ে ধানের জন্য চাই আলাদা রকম যত্ন এবং সতর্কতা। তাই চলুন অসময়ের বৃষ্টিতে ধানের যত্ন সম্পর্কে সবিস্তারে জেনে নেই।
অসময়ের বৃষ্টিতে ধানের যত্ন কিভাবে নিবেন
এই সময়ে ধানের বীজতলার সেচ নালা পরিষ্কার রাখতে হবে।
অর্থাৎ অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
নতুবা ধান গাছের গোড়ায় পানি জমলে গাছ মরে যাবে।
এ সময় বীজতলায় বীজ বপন থেকে বিরত থাকা উচিত।
সেই সাথে সার বা কীটনাশক দেয়াও বন্ধ রাখুন, এতে পরিবেশ বা পানি দূষিত হবে না।
বীজ বপনের ১৮ থেকে ২৮ ঘণ্টার মধ্যেই পানি নিষ্কাশন করে ফেলতে হবে।
মাটিতে পানি যেন জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আবার পানি ধরে রাখতে বীজ বপনের তৃতীয় দিন থেকে পঞ্চম দিন অবধি প্রয়োজন মত পানি প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ বপনের পঞ্চম দিন থেকে পানির গভীরতা বাড়াতে হবে।
চারার উচ্চতার উপর নির্ভর করে পর্যায়ক্রমে ১.৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়াতে হবে।
এরপর থেকে নিয়মিতভাবে ২.৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানির গভীরতা বজায় রাখতে হবে।
এই সময় বীজতলাতে আক্রমণ হতে পারে থ্রিপস এর।
এতে আক্রান্ত চারার পাতা একপাশ থেকে মুড়িয়ে সোজা হয়ে যায়।
পরবর্তীতে পাতা সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়।
তবে শতকরা ২৫ পাতা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে কীটনাশক নিতে হবে।
এক্ষেত্রে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলিলিটার স্প্রে করা যেতে পারে।
বৃষ্টির আগে দিনের তাপতামত্রা সামান্য বেড়ে যেতে পারে।
পাতা ব্লাস্ট সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
বৃষ্টির পর কমে যেতে পারে তাপমাত্রা।
সেজন্য পাতা ব্লাস্টের উপদ্রব শুরু হবে।
কিন্তু এটি মহামারির আকার ধারণ করবে না।
এই ক্ষেত্রে নেটিভো ৬ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ভালো।
এটি কমিয়ে দেবে চারা ধসা রোগের সম্ভবনা।
বীজতলা যদি পানিতে ডুবে যায় তাহলে তাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ দেখা দিতে পারে।
সেক্ষেত্রে চারা একটু সোজা হয়ে উঠলে সার স্প্রে করতে পারে।
৬০ গ্রাম পটাশ সার ও ২০ গ্রাম জিংক সার ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রায় ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
সেই সাথে বীজতলা শুকিয়ে দিতে হবে।