পাবনার সাঁথিয়া উপজেলা দেশের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা। এখানে মুড়িকাটা জাতের নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে দুই সপ্তাহ ধরেই। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এই পেঁয়াজ উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। কিন্তু হাটে পেঁয়াজের দাম নিয়ে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। লাভ তো দূরের কথা, বিঘাপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা লোকসান গুণছেন কৃষক। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিঘাপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা লোকসান তারা কিভাবে পুষিয়ে নিবেন তা নিয়ে তাদের কোন ধারণা নেই।
স্থানীয় চাষি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত দুই বছরে পেঁয়াজের ভালো দাম ছিল। তাই এবার তাঁরা পেঁয়াজ চাষে আরও অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন।.
গতবারের চেয়ে এবার আবাদ বেশি হয়েছে
এই কারণেই গতবারের চেয়ে এবার প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ বেড়ে গেছে।
চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুরুতে প্রতি মণ মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজবীজ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে।
কিন্তু পরবর্তীতে এই দাম সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় দাড়ায়।
অথচ গত বছর চাষিরা এই বীজ কিনেছেন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা মণ দরে।
চাষিরা আরও জানান যে গতবারের তুলনায় কামলা খরচও এবার বেড়েছে।
এবার ৬০০ টাকার নিচে কোন কামলা পাওয়া যাচ্ছে না।
যার কারণে পেঁয়াজের আবাদে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।
চাষিদের সাথে কথা বলে আরও জানা যায়, বিঘা প্রতি পেঁয়াজ আবাদের জন্য বীজ হিসেবে সাত থেকে আট মণ কন্দ পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে চাষিদের।
এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সার, বিষ ও কামলা খরচ।
সব মিলিয়ে এক বিঘায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ পড়েছে।
প্রতি বিঘায় পেঁয়াজের ফলন হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ মণ করে।
বর্তমান বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ পেঁয়াজ আবাদ করে কৃষকের বিঘাপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সাঁথিয়ার করমজা হাটে গিয়ে পেঁয়াজ বিক্রির চিত্র দেখা যায়।
প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা মণ দরে।
কৃষকদের কাছে থেকে সেই পেঁয়াজ কিনেপেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা ট্রাক বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন।
হাটের পেঁয়াজের আড়তদারদের সাথে কথা হয়।
তারা জানান যে, এই হাট থেকে প্রায় ৪০০ টন পেঁয়াজ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়।