হাওরাঞ্চলের বোরোর আবাদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায়। কিন্তু বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। এজন্য প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে হবে। এই লক্ষ্যে কাজ করবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। হাওরাঞ্চলে জাইকা প্রযুক্তিগত সহযোগীতা করবে। সংস্থাটির পার্টনারশিপ কর্মসূচির আওতায় একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ‘প্রাকটিস অ্যান্ড ডিসেমিনেশন অব ডিজাস্টার রেসিসট্যান্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপটিভ এগ্রিকালচার ইন দ্যা হাওর এরিয়া’ শিরোনামের এই প্রকল্প নিয়ে কাজ করবে সংস্থাটি।
রোববার এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যবিবরণী স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের হবিগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে এটি স্বাক্ষরিত হয়। জাইকা বাংলাদেশের সিনিয়র রিপ্রেজেনটেটিভ তাকেশি সাহেকি স্বাক্ষর করা হয়।
শেয়ার দ্যা প্ল্যানেট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন টেটসুয়ো সুটসুই, ব্রি হবিগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের প্রধান ড. মোজাম্মেল হক এবং এসইডি হবিগঞ্জের চিফ এক্সিকিউটিভ মোহাম্মদ জাফর ইকবাল চৌধুরী এতে স্বাক্ষর করেন।
হাওর এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব খুব। তাই দুর্যোগ সহনশীল কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
বিশেষ করে স্থানীয় কৃষকদের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করবে এটি।
প্রকল্পটি অল্প দিনে উৎপাদনশীল এবং ঠাণ্ডা-সহনশীল ধানের নতুন জাত উৎপাদন করা হবে।
একই সাথে সবজি বীজ বিতরণ করবে এ সংস্থা, যা হাওর এলাকার জন্য উপযোগী।
প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে হবিগঞ্জের সদর উপজেলা এবং বানিয়াচং উপজেলায় স্থানীয় কৃষকদের উন্নত সেবা দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিটিউটের সাথে নিবীড়ভাবে কাজ করবে।
বন্যার ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস, মৌলিক অবকাঠামোতে প্রবেশাধিকার সুবিধা এবং কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে জাইকা কাজ করছে।
জাইকা কাজ করছে হাওর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি’র ‘হাওরে বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প’ বাস্তবায়নে।
পাশাপাশি দারিদ্র বিমোচন ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে কৃষি ও মৎস্য পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো ও বিপণন ব্যবস্থার জন্য গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে এলজিইডি।
পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ইত্যাদি বহুমুখী সুবিধা নিশ্চিত করণে এলজিইডির ‘ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প’ (২য় পর্যায়) চালু রয়েছে।
এই সকল প্রকল্পগুলো কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলায় চলমান রয়েছে।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ১. দরিদ্র্য বিমোচন ২. খাদ্য নিরাপত্তা ৩. জলবায়ু ইত্যাদি বিষয়ে এসডিজির লক্ষ্য পদক্ষেপ অর্জনে অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।