Sunday, 20 April, 2025

সর্বাধিক পঠিত

পেরুতে সারের বিকল্প পাখির মল


ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে সারের ঘাটতি। যার ফলে কমে গেছে সারের আমদানি। সেইসাথে তিন-চার গুণ বেড়ে গেছে সারের দাম। তবে সারের এমন সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু এক বিকল্প ব্যবহার করছে। বিকল্প এ উপায়টি শতবর্ষী পুরোনো। দেশটিতে এখন সারের বিকল্প পাখির মল যা ব্যাপক আকারে ব্যবহার হচ্ছে।

সারের বিকল্প হিসেবে সামুদ্রিক পাখির মল ব্যবহার এমন খবর প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।

আরো পড়ুন
কক্সবাজার উপকূলে ১০ হাজারের বেশি কচ্ছপের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত

চলতি মৌসুমে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন উপকূলে কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও বাচ্চা প্রজননে তৎপরতা বেড়েছে। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থা Read more

হালদা নদীতে মা মাছের আগমন, ডিম আহরণে প্রস্তুতি তুঙ্গে
হালদার মা মাছ

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুরুতে এই নদীতে ডিম Read more

জানা যায় সামুদ্রিক পাখির মল গুয়ানো নামেই পরিচিত।

একসময় বাণিজ্যিকভাবে সেটি সংগ্রহ ও বিক্রি করা হতো।

বিশ্বের অনেক সমুদ্র-তীরবর্তী ও দ্বীপদেশেই এটি সংগ্রহ করা হত।

পেরুতেও এভাবে পাখির মল সংগ্রহ করার কাজটি করতেন আফ্রিকার ক্রীতদাস, স্থানীয় আদিবাসী ও চীনা শ্রমিকেরা।

সামুদ্রিক পাখিরা সাধারণত সামুদ্রিক মাছ খেয়ে জীবনধারণ করে।

তাই তাদের মলমূত্র বা গুয়ানো খুবই পুষ্টিগুণসম্পন্ন জৈব সার।

এতে উদ্ভিদের বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উপায়ান যেমন নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশিয়াম ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

তাই বিভিন্ন দেশে সার হিসেবে এর বিশেষ গুরুত্ব অনেক আগে থেকেই।

ইতিহাস ঘেটে জানা যায় পাখির মলে তৈরি এই গুয়ানো সারের জন্য রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল চিলি।

১৮৮০-এর দশকে পেরু ও বলিভিয়ার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে জড়ায় চিলি।

পরবর্তীতে আধুনিক প্রযুক্তির কারখানায় তৈরি সার এলে গুরুত্ব কমে যায় প্রাকৃতিক গুয়ানোর।

সাম্প্রতিক সময়ে পেরুতে আমদানি করা সারের দাম এখন তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে।

দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে বস্তাপ্রতি সারের দাম তিন গুণ বেড়েছে।

চলতি বছরে সারের আমদানি কমেছে ৫৮ শতাংশ।

তাই উপকূলীয় দ্বীপ ও উপদ্বীপ থেকে সামুদ্রিক পাখির মল সংগ্রহ করছে তারা।

এর জন্য বিশেষ কার্গো পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে পেরু সরকার।

অন্যদিকে আমদানি করা সার কেনার সামর্থ্য নেই পেরুর বেশিরভাগ কৃষকের।

তাই তারাও এখন পাখির মল ব্যবহারে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

রাজধানী লিমার নিকটবর্তী কৃষিনির্ভর শহর মালা।

এখানকার কৃষকরা জানান দ্বীপগুলো থেকে পাওয়া গুয়ানো খুবই ভালো সার।

তবে গুয়ানো ব্যবহার করা হলে ফসল পাকতে একটু বেশি সময় লাগে।

গার্ডিয়ান সূত্রে জানা যায়, পেরুতে ফসল উৎপাদন দুই-তৃতীয়াংশ কমেছে।

এতে বাজারে খাদ্য সরবরাহে ঘাটতি হতে পারে।

এদিকে চাহিদা অনুসারে গুয়ানোর পরিমাণ কম থাকায় ফসল উৎপাদনে প্রভাব পড়বে।

পেরুর গ্রামীণ উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ এডুয়ার্ডো জেগারা।

তিনি বলেন, গুয়ানো খুবই ভালো সার।

কিন্তু এই সার সরবরাহের প্রাকৃতিক সীমা আছে।

যে পরিমান সার উত্তোলন সম্ভব তা দেশের মোট সারের চাহিদার ১০ শতাংশ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি পরবর্তী বিভিন্ন সংকটের কারণে পেরুর খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা দ্বিগুণ বেড়েছে।

যার কারনে দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীই ভবিষ্যত ভুক্তভোগী হবে।

0 comments on “পেরুতে সারের বিকল্প পাখির মল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক লেখা

আর্কাইভ