ব্রয়লারে সারা বছরই নানা রকম শ্বাসতন্ত্রের রোগ লেগে থাকে, বিশেষ করে শীতকালে এর প্রকোপ অনেক গুণ বেড়ে যায়। ফলে মুরগির খাবার খাওয়ার হার কমে যায়। এতে করে কাঙ্খিত ওজন পাওয়া যায় না। শীতকালে সেডের বায়ু চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। তাই অ্যামোনিয়া গ্যাস জমে যায় ফলে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়।
শ্বাসতন্ত্রের রোগে অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবঃ
সেডে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা ভাল না হলে, অ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমান বেড়ে যায়। এর দরুণ আর্দ্রতা বেড়ে যায় ফলে সেডের লিটার স্যাঁতস্যাতে হয়ে যায়। আর এটাই শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগের মূল কারণ। অতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস শ্বাসতন্ত্রের সিলিয়াকে নষ্ট করে দেয়। মূলত এই সিলিয়াই নানা রকম রোগের জীবাণুকে শ্বাসতন্ত্রের মধ্যে ঢুকতে বাঁধা দেয়। নানারকম ভাইরাসের জীবাণু যেমনঃ IB,ILT,ND খুব সহজেই শ্বাসতন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করে। বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা খারাপ হওয়াতে সেডের লিটার খুব তারাতারি নষ্ট হয়ে যায়। ভেজা ও স্যাঁতস্যাতে লিটার ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর জন্য খুব ভাল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেয়। একারণে ভাইরাল রোগের পরে খুব সহজেই নতুন করে ব্যাকটেরিয়াল রোগ দেখা দেয়। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ই-কলাই নামক ব্যাকটেরিয়াই প্রধান।
প্রতিকারের উপায়সমূহঃ
১) শীতকালে প্রতি মুরগীর জন্য ১.৫ স্কয়ার ফিট জায়গা হিসাব করে সেড প্রস্তুত করতে হবে।
২) সেডে আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। প্রয়োজনে এক্সস্ট ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) শীতকালে লম্বা সময় ধরে পর্দা দ্বারা আবৃত রাখা যাবে না। ব্রুডিং এর সময় প্রয়োজনে মাঝে মাঝে পর্দা খুলে বাতাস বের করে আবার পর্দা দেয়া যায়। মনে রাখতে হবে কোন ভাবেই যেন সেডে অক্সিজেন এর অভাব না হয়।
৪) লিটারে অ্যামোনিয়া গ্যাসের মাত্রা বেশি হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য মাঝে মাঝে লিটারের গন্ধ নিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।
৫) শীতকালে লিটারের পুরুত্ব কমপক্ষে ৩ ইঞ্চি হতে হবে।
৬) লিটার স্যাঁতস্যাতে হয়ে গেলে দ্রুত তা পরিবর্তন করতে হবে।
৭) নিয়মিতভাবে IB, ND ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা দিতে হবে।
৮) সর্বোপরি খামারের জীব নিরাপত্তার উপরে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
লেখক
ডাঃ খন্দকার শাওন হাসনাত
শিক্ষার্থী, ভেটেরিনারি অনুষদ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়