কৃষি উদ্যোক্তা সালাউদ্দিন মোল্লা একসময় ঢাকার ফকিরাপুলে মিষ্টির ব্যবসা করতেন। মিষ্টির ব্যবসায় লাভও ভালো হতো তার। পরে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসা ছেড়ে দিবেন, গ্রামে গিয়ে করবেন মাল্টা ও লেবু বাগান। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথমে আপত্তি করে পরিবারের সকলেই। লেবু এবং মাল্টা চাষ এর প্রতি তার ছিল অনেক আগ্রহ।
কিন্তু সালাউদ্দিন তো দমে যাওয়ার পাত্র নন। তিনি দমেও যান নি। ২০১৩ সালে প্রথমে ৫০ শতক জমি লিজ নেন। ৩০০টি লেবু গাছ দিয়ে লেবু চাষ শুরু করেন। ২০১৮ সালে আরও দুই একর ৪০ শতাংশ জমি লিজ নেন। এবার ১ হাজার ৩০০টি গাছ দিয়ে শুরু করেন মাল্টার বাগান।
মাত্র ১ বছরে লেবু চাষ এবং ২ বছরে মাল্টা চাষ। আর সেই থেকে তিনি সফল লেবু ও মাল্টা চাষি। বর্তমানে বছরে তার বাগান থেকে মাল্টা ও লেবু বিক্রি হয় প্রায় বিশ লাখ টাকার। এই বাগানগুলোতে লেবু ও মাল্টার চারা বিক্রি হয়। এতে তিনি আরও চার লাখ টাকা পান বছরে।
লেবু এবং মাল্টা চাষ এ সফল উদ্যোক্তা
শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. কাশেম মোল্লার ছেলে সালাউদ্দিন মোল্লা (৪৫)। সখিপুর থানার সখিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আনু সরকার কান্দি গ্রামে তার বসবাস।
একসময় টাঙ্গাইল জেলায় লেবু ও মাল্টা চাষের একটি বাগান দেখেন এই উদ্যোক্তা। তখনই তিনি এই ফল চাষে আগ্রহী হন। ২০১৩ সালে ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এসে শুরু করেন লেবু ও মাল্টার বাগান। বর্তমানে সাত একর ৯০ শতক জমিতে লেবু চাষ করছেন তিনি। দুই একর ৪০ শতক জমিতে মাল্টার বাগান করেছেন। সব মিলে প্রায় ৭ হাজার ৬০০ লেবু ও এক হাজার ৮০০ মাল্টাগাছ গাছ ।
সালাউদ্দিন মোল্লা জানান যে, লেবু ও মাল্টা চাষে তার আগ্রহ বেশ। তার বাগানে আছে চায়না থ্রি, সিলকেট লেবু এবং পাকিস্তানি বেড়িকাটা মাল্টা জাতের গাছ । এক বছরের মধ্যেই তিনি লেবু ও দুই বছরের মধ্যে মাল্টা ফলন শুরু হয়ে যায়। বর্তমানে বারোজন লোক কাজ করেন তার বাগান পরিচর্যার জন্য। এলাকার অনেক বেকার যুবক বেকারত্ব দূর করছেন মাল্টা-লেবু বাগান করে ।
বাবা কাশেম মোল্লা এখন ছেলের লেবু ও মাল্টা বাগানেও কাজ করেন, নাম রেখেছেন ‘মোল্লা লেবু ও মাল্টা বাগান’।
সালাউদ্দিন জানান বাগানের মাতৃগাছ থেকে বাকল দিয়ে ‘গ্রাফটিং’ করে চারা উৎপাদন করেন তিনি। তিনি িআরও জানান যে, প্রায় ২০ লাখ টাকার লেবু আর আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন তিনি।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সালাউদ্দিন তার মাল্টা বাগানের পরিচর্যা করছেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে কিনে নিচ্ছেন মাল্টা ও লেবু এবং বাগানের ছবি তুলছেন। ।
জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা ইসলাম জানান যে তিনি সালাউদ্দিন মোল্লার বাগানে গিয়েছেন। তার উৎপাদিত মাল্টার আকার বড় এবং মিষ্টি। পাশাপাশি তিনি কৃষি কার্যালয়ের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখেন।