Saturday, 18 January, 2025

সর্বাধিক পঠিত

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে হতাশ কৃষক


হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে জ্বালানি তেলের মূল্য। অস্বাভাবিক হারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে আমন মৌসুমের কৃষকেরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। যেহেতু ভরা বর্ষার মৌসুমে এ বছর স্বাভাবিক সময়ের মতো তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাই এবার চাষাবাদ অনেকটা সেচ নির্ভর। এখন অতিরিক্ত দামে ডিজেল কিনে জমিতে সেচ দিতে হলে উৎপাদন খরচ বাড়বে। আর সেরকম হলে ধান বিক্রি করেও লোকসান কাটানো সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার একজন কৃষক জানান, কৃষকেরা পাট কেটে জাগ দিয়েছেন।

আরো পড়ুন
টবে পুঁইশাক চাষ পদ্ধতি

পুঁইশাক (English name: Malabar spinach) একটি জনপ্রিয় সবুজ শাক, যা বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং সহজে চাষযোগ্য। এটি মূলত গ্রীষ্মকালীন শাক Read more

কোয়েল পাখি (quail birds) পালন পদ্ধতি

কোয়েল পাখি পালন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, কারণ এটি অল্প জায়গায় এবং কম খরচে করা যায়। নিচে কোয়েল পাখি Read more

এর পর পরই ধান রোপণের জন্য জমি তৈরি করতে ব্যস্ত সকলে।

যেহেতু এবার আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি।

তাই জমির মাটি নরম করতে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দেয়া হচ্ছে।

আগে প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা দরে কিনে সেচ দেওয়া হচ্ছিল।

কিন্তু আজ সকাল থেকেই লিটারপ্রতি ১১৪ টাকা দিয়ে ডিজেল কিনে নিতে হচ্ছে।

এতে সেচ দেবার খরচ আরও বেড়ে গেছে।

এই কৃষক আরও জানান যে কেবল জ্বালানি তেলই নয়।

সেই সাথে রাসায়নিক সারের দামও হু হু করে বেড়েই চলেছে।

তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন এভাবে একের পর এক জিনিসের দাম বাড়াতে থাকলে মানুষকে একসময় না খেয়েই মরতে হবে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে।

তবে এই প্রতিবেদন করা পর্যন্ত এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো যথেষ্ট সময় আছে।

অনেকেই চারা নিয়ে অপেক্ষায় আছেন বৃষ্টির।

বৃষ্টি শুরু হলেই কৃষকেরা ধান লাগাতে শুরু করবেন।

গতকাল শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার।

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে।

অন্যদিকে পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়েছে।

দাম বাড়ানো হয়েছে অকটেনেরও।

৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে প্রতি লিটার অকটেন।

গতকাল রাত ১২টার পর থেকেই নতুন এই দাম সারাদেশে কার্যকর হয়েছে।

সরেজমিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক এবং শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ধানের চারা রোপণ করার জন্য জমি প্রস্তুত করছেন তারা।

জমিতে শ্যালো ইঞ্জিন থেকে পানি দেয়া হচ্ছে।

এসময় অপর এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে চাষবাস বন্ধ করে দেবার কথা বলেন।

চষাবাদ করে সংসার চালানো সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন যেভাবে ডিজেল, রাসায়নিক সারের দাম বেড়েছে তাতে কৃষিকাজে লাভবান হওয়া সম্ভব নয়।

এসময় পার্শ্ববর্তী জমিতে কাজ করা কৃষকরা জানান বিলের ১৭৫ বিঘার এ জমিতে তারা আমনের চাষ করেন।

বর্ষা মৌসুমে বিলে শাপলার দেখা গেলেও এবারে তাতে পানি জমেনি।

মাটি শুকিয়ে যাওয়ায় বিলের নিচু জমিতে ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন তারা।

এখন শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে ধানের আবাদ করতে অতিমাত্রায় খরচ হচ্ছে।

এতে করে ধানের আবাদ তাদের জন্য লোকসান হবে।

তবুও সারা বছর চালের চাহিদা পূরণ করার জন্য ধানের আবাদ শুরু করেছেন।

আপাতত লোকসান মেনে নিয়েই চাষাবাদ করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মেহেরপুর জেলার উপপরিচালক সামছুল আলম।

তিনি বলেন, রোপা আমন চাষ মূলত বৃষ্টি নির্ভর।

কিন্তু এ বছর প্রয়োজনীয় পরিমানে বৃষ্টি হয়নি।

সেই সাথে গোদের উপর বিষফোড়া হিসেবে বেশ কিছুদিন ধরে খরায় পুড়ছে আমনের বীজতলা।

এমন পরিস্থিতিতে ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে হঠাৎই।

আর এতে কৃষকেরাও পড়েছে চরম বিপাকে।

0 comments on “জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে হতাশ কৃষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *